সিগারেটের বিক্রিমূল্য নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা রীতিমত হরিলুট করছে। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, আর তাই সরকার এ থেকে জনগণকে বিরত রাখতে প্রতি বছর সিগারেটের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে। আর এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রতি বছর বাজেট ঘোষণার এক মাস আগেই বিপুল পরিমাণ সিগারেট মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। এ সুযোগে খুচরা বিক্রেতারাও সিগারেটের দাম বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু এবার বাজেট ঘোষণার দুই মাস আগ থেকেই খুচরা দোকানদাররা সিগারেটের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সিগারেটের এজেন্টরা যে মূল্যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে সিগারেট বিক্রি করে, খুচরা বিক্রেতারা তার চেয়ে অনেক বেশি দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে।
ব্রিটিশ-আমেরিকান টোবাকো ও ঢাকা টোবাকো থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া পল্টনের দুইজন এবং মগবাজারের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীও অতিরিক্ত মূল্যের কথা স্বীকার করেন।
বেনসন সিগারেটের সর্ব্বোচ্চ মূল্য ২০২ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। গোল্ডলিফের বিক্রয় মূল্য ১৩৫ টাকা হলেও খুচরা দোকানদাররা বিক্রি করছে ২০০ টাকায়। অর্থাৎ এক প্যাকেট সিগারেটে ৭৫ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া মার্লবোরো সিগারেটের সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য ১৯৮ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা, ৮৫ টাকার ষ্টার বিক্রি হচ্ছে ১৪০টাকায় (প্রায় ডবল), নেভী ৮৫ টাকা-বিক্রি ১৩০ টাকা, পলমল ১৩৫ টাকা-বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, বন্ড ১৩৫-বিক্রি ১৬০ টাকা, শেখ ৪৫ টাকা- বিক্রি ৯০ টাকা, হলিউড ৪৫-বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, পাইলট ৪৬-বিক্রি ৭০ টাকায় এবং ম্যারিজ ৪২ টাকা- বিক্রয় হচ্ছে ৭০ টাকায়।
ক্রয় ও বিক্রয়মূল্যের এই বিশাল পার্থক্যে দিশেহারা ক্রেতারা। দেখা গেছে, সিগারেটের একেকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এভাবে দৈনিক অতিরিক্ত কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ-আমেরিকান টোবাকো কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার মানিক হোসেন বিবার্তাকে জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ইতিমধ্যে সিগারেটের বিক্রয়মূল্যের স্টিকার দোকানের সামনে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছি। কেউ কেউ শুনছে, কেউ কেউ কর্ণপাতও করছে না। এ ব্যাপারে আমরা ক্রেতাদেরও বেশি দাম দিয়ে না কেনার আহবান জানাই।
ঢাকা টোবাকো কোম্পানির হেড অফিসের কর্মকর্তা এমরান হোসেন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি এটা নিয়ন্ত্রণ করার । তিনি বলেন, ক্রেতারা একটু সচেতন হলে খুচরা দোকানদাররা এভাবে ক্রেতাদের জিম্মি করতে পারতেন না। আমরা দোকানে দোকানে সঠিক মূল্য লেখা স্টিকার লাগাচ্ছি। যে সব দোকানদার তাদের দোকানে স্টিকার লাগাবে না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কয়েকদিনের মধ্যেই ব্যবস্থা নেব।
বিবার্তা/বিপ্লব/মৌসুমী