আজ শুক্রবারই নির্ধারিত হবে ব্রিটেনের ভবিষ্যত। এর পাশাপাশি জানা যাবে দেশটিতে বসবাসরত লাখো বাংলাদেশীরও ভবিষ্যত। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে ব্রেক্সিট সম্পন্ন হলেই লাখ লাখ বাংলাদেশী চাকরি হারাবে। এতে বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হবে।
ব্রিটেনে বাঙালি এমপি রুশনারা আলী বলেন, ‘ব্রেক্সিট’ সফল হলে বাংলাদেশীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গড়পড়তায় চাকরি হারাবে প্রায় পাঁচ লাখ। আনুপাতিক হিসেব টানলে ব্রিটিশদের চেয়ে বাঙালিসহ অন্য অভিবাসীরাই চাকরি হারাবে বেশি।
ব্রেক্সিটের বিপক্ষে রুশনারা আলীর যুক্তি, ১৯৭৫ সালের পর থেকে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত মজবুতের প্রধান নিয়ামক হলো ইউরোপিয়ান জোটের সদস্য হওয়া। একক বাজারের অংশ হিসেবে ইইউতে ব্রিটেনের সবচেয়ে শক্তিশালী ও নিরাপদ অবস্থান। সেই অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করতে আমাদেরকে ইইউ জোটের মধ্যেই থাকতে হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ অভিমত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে এক ভয়ানক অর্থনীতির চাপে পড়তে হবে। মন্দার ঝুঁকিতে থাকতে হবে, যার কারণে পাঁচ লাখ চাকরি হারানোর আশংকা রয়েছে। একটি স্থিতিশীল ব্যবস্থা থেকে কেন অজানা অস্থিতিশীল অন্ধকারময় পথে হাঁটতে হবে। অজানা গন্তব্যের দিকে না গিয়ে বিদ্যমান ব্যবস্থায় অবস্থান করে নিজেদের প্লাটফর্ম আরও দৃঢ় করার পক্ষে দুইবার নির্বাচিত বাঙালি অধ্যুষিত বেথনালগ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এই এমপি।
তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কারণে বাংলাদেশীসহ সংখ্যালঘুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ইইউতে থাকার কারণেই বাংলাদেশসহ নন ইউরোপিয়ান দেশ থেকে কারি-শেফ আনতে ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না। ক্ষমতাশীন দলের এমপি প্যান্টেলের এমন মন্তব্যের বিরোধিতা করে রুশনারা আলী বলেন, কারি শিল্পের জন্মদাতা সংখ্যালঘুরা। ব্রিটেনের বাইরে থেকে দক্ষ মাইগ্রেট আনার আইনগত কড়াকড়ি ইইউতে থাকা বা না থাকার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
তিনি মনে করেন, এটি ক্ষমতাসীন দলের সৃষ্ট ইমিগ্রেশন নীতির একটি ভ্রান্ত পলিসি। ক্ষমতাসীনরা নিজের তৈরি নীতিকে এখন অন্যের গায়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ব্রিটেনকে তার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য এবং বাইরে কাজের ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইইউতে থেকেই যুদ্ধ করে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, রুশনারা আলী এমপি ছাড়াও রূপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক- এ দু’জন বাঙালি এমপিও ব্রিটেনের ইইউ ছাড়ার বিপক্ষে। কিন্তু বাঙালি প্রবাসীদের অধিকাংশ ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে। তাদের মতে, জোটভুক্ত দেশগুলোতে যে হারে অভিবাসীরা আসছেন তাদের চাকরির বাজারে বাঙালি তথা এশিয়ানদের দ্বার সংকুচিত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে বাসস্থান, চিকিৎসা ব্যবস্থা, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ায়ও।
বিবার্তা/নিশি
>> ব্রিটেনের ইইউতে থাকার বিপক্ষে ভোট বেশি