ব্রিটেনে প্রতিবছর ২০ পার্সেন্ট হারে বাড়ছে হালাল খাবারের চাহিদা। আর পুরো পৃথিবীতে এই এর রয়েছে কয়েক ট্রিলিয়ন পাউন্ডের বাজার। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অমুসলিমদের মাঝেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে হালাল খাবারের।
ব্রিটেনের হালাল ফুড বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্রিটেনসহ পুরো ইউরোপের হালাল খাবারের বাজার ধরে রাখতে মুসলমানদের এগিয়ে আসতে হবে।
ব্রিটেনের ফুড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ইভেন্টটি প্রতিবছর আয়োজন করে আসছে হালাল ফুড অথরিটি। সেন্ট্রাল লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেস হোটেলের বলরুমে দিনব্যাপী আয়োজিত এই কনফারেন্সে যোগ দেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ডেলিগেট। এতে ইউকে-ইউরোপের বাজারে হালাল খাবারের প্রসার- প্রচার ও সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। বিভিন্ন বিষয়ে কী নোট উপস্থাপন করেন বিশেষজ্ঞ বক্তারা।
উল্লেখ্য, হালাল খাবার, হালাল মেডিসিন, এমনকি হালাল কসমেটিকস থেকে নিয়ে অসংখ্য হালাল পণ্যের বিশ্বব্যাপী বাজার সৃষ্টি করেছে মালয়েশিয়া। বলতে গেলে, এই সেক্টরে পাওনিয়্যার মুসলিম এই দেশটি।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এবারের কনফারেন্সে আমন্ত্রন জানানো হয়েছিলো দেশটির প্রধানমন্ত্রী অফিসের ডেপুটি মিনিস্টার ড. আসিরাফ ওয়াজদি বিন দাতু দাসুকিকে। তিনি বলেন তার দেশ প্রতিবছর হালাল খাতে রপ্তানি করে এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। ই্উকে এবং ইউরোপের বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বিশ্বখ্যাত ফুড চেইন কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেনও (কেএফসি) হালাল ফুড অথরি্টির অন্যতম ক্লায়েন্ট। ইউকে এবং আয়ারল্যান্ডে কেএফসির ১০০টি আইটলেটে সম্পূর্ণ হালাল খাবার পরিবেশন করা হয়। দিন দিন এই চাহিদা আরো বাড়ছে বলে জানান কেএফসির প্রডাক্ট এক্সেলেন্স ডাইরেক্ট ক্রিস ফেলস। হালাল ফুড অথরিটি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানান তিনি।
হালাল ফুড অথরিটির চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন খান বলেন, হালাল ফুড অথরিটি ১৯৯৪ সালে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ২০ বছরে এই সংস্থা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় হালাল সার্টিফাইয়িং অথরিটিতে পরিণত হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে হালাল খাবারের অনুমোদন, হালাল নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোপরি হালাল ব্যবসার প্রসার ও শক্তিশালীকরণ, সুবিধা, সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদান করা আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন তার সংস্থাটি হালাল ফুড ফাউন্ডেশন নামক চ্যারিটির অধীনে একটি বিজনেস উইং হিসেবে কাজ করে যাচেছ। সংস্থাটি বোর্ড অব ট্রাস্টি দ্বারা পরিচালিত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান।
সংস্থার প্রধান নির্বাহী সাকিব মুহাম্মদ বলেন, হালাল ফুড অথরিটিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, দক্ষ এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একটি টিম রয়েছে। ফুড টেকনোলজিস্ট, অডিটর, ইন্সপেক্টর এমনকি এনিমেল এবং পোলট্রি ওয়েলফেয়ার অফিসাররাও কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
সাকিব মুহাম্মদ বলেন, সার্টিফিকেশন শুধুমাত্র পশু-পাখী জবাইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে প্রস্তুতকৃত খাবার, প্যাকেজিং, সরবরাহ, বিতরণ, রপ্তানি করা হালাল উপাদান, ফ্লেভার্স, ইমালসিফাইয়ার্স, তৈল এবং চর্বি, ফার্মাসিউটিকেলস্ এবং কসমেটিক্স প্রোডাক্টসও সার্টিফাই করা হয়। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সংস্থাটির অনুমোদিত ১৭০টি মতো কোম্পানি রয়েছে। তন্মধ্যে বিশ্বখ্যাত ইউনিলিভার, মার্স চকলেটস্, ক্রিসপি ক্রিম, কেএফসি, এলাইড ব্যাকারী, কিংসমিল ব্রেড ও আঙকেল বিনজ অন্যতম।
বিবার্তা/জিয়া