আমরা সাধারণত পরিচিত জায়গা ছাড়া ঘুরতে যাওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি না। নিরাপত্তার কারণেও আমরা অনেক জায়গায় যেতে চাই না। যান্ত্রিক নগরী ঢাকার আশেপাশে ঘুরার জায়গার সীমাবদ্ধতার কারণেও ছুটির দিনগুলো অনেকেই ঘুমিয়ে কাটায়।
ছুটির দিনে অথবা কর্মব্যস্ততার ফাঁকে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাট। ঢাকার খুব কাছেই পদ্মা নদীর উত্তাল ঢেউ দেখতে আর নৌকা ভ্রমণে যেতে পারেন নবাবগঞ্জের দোহার উপজেলার মৈনট ঘাটে।
এখানে আসলে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবেন পদ্মার অপরূপ জলরাশি দেখে। বিস্তীর্ণ জলরাশি আর নদীর বুকে জেলেদের সারি সারি নৌকা দেখলে মনে হবে আপনি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আছেন।
এ জায়গা এখনো সবার কাছে পরিচিত না হওয়ায় অনেক ভ্রমণপিপাসু মানুষই বঞ্চিত হচ্ছে এই সৌন্দর্য উপভোগ করা থেকে। খুব ভোরবেলা আসলে পাবেন সারারাত জেলেদের ধরা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বাজার। চাইলে মাছ কিনতেও পারবেন।
মৈনট ঘাটের সৌন্দর্য উপভোগ করার শ্রেষ্ঠ সময় বর্ষাকাল। পদ্মার পাড়ে বসে সূর্যাস্ত উপভোগ করাও মন্দ হবে না। ছুটির দিনগুলোতে আশেপাশের স্থানীয় লোকজন পদ্মার বুকে স্পীডবোট আর ট্রলার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। দূরদুরান্ত থেকেও আসেন অনেকে। ঘাটের পাশাপাশি দেখে যেতে পারবেন নবাবগঞ্জের জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, আনসার ক্যাম্প, খেলারাম দাতার বাড়িসহ আরও কিছু দর্শনীয় স্থান।
কীভাবে আসবেন: ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে আসার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায়টি হচ্ছে গুলিস্তানের গোলাপ শাহের মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা যমুনা পরিবহনে বাস। ৯০ টাকা ভাড়া আর দেড় থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে আপনি পৌঁছে যাবেন মৈনট ঘাট। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন। মৈনট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে শেষ বাসটি ছেড়ে যায় সন্ধ্যা ৬টায়। যারা প্রাইভেট কার অথবা বাইক নিয়ে আসতে চাচ্ছেন, তারা এই বাসের রুটটাকে ব্যবহার করতে পারেন। আসতে সুবিধা হবে।
কোথায় থাকবেন: ট্যুরিস্টদের থাকার জন্য মৈনট ঘাটের আশপাশে কোনো হোটেল, রিসোর্ট, বোর্ডিং এখনও তৈরি করা হয়নি। স্থানীয় কোনো বাসিন্দার বাড়ি ম্যানেজ করতে না পারলে দিনে এসে দিনেই ফিরে যেতে হবে।
কোথায় খাবেন: বেশির ভাগ মানুষেরই ইচ্ছা থাকে পদ্মার তীরে বসে পদ্মার ইলিশ খাওয়ার। মৈনট ঘাটে দুটি ভাতের হোটেল আছে। একটি আতাহার চৌধুরীর হোটেল অপরটি জুলহাস ভূঁইয়ার আর কার্তিকপুর বাজারে শিকদার ফাস্টফুড নামক একটা খাবারের দোকান আছে। ঢাকা হোটেলসহ আরও কিছু ভাতের হোটেলও আছে। কার্তিকপুরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি অনেকে বিদেশেও পাঠায়।নিরঞ্জন মিষ্টান্নভাণ্ডার, মুসলিম সুইটস, রণজিৎ মিষ্টান্নভাণ্ডারসহ আরও কিছু মিষ্টির দোকান আছে।
সতর্কতা: সাঁতার না জানলে গোসল করার সময় পদ্মার বেশি গভীরে যাবেন না। সিগারেট অথবা খাবারের প্যাকেট, পানির বোতল অথবা যেকোনও প্রকার ময়লা যেখানে সেখানে ফেলবেন না। পাখি মারা থেকে বিরত থাকুন।
বিবার্তা/জিয়া