বাঙালিরা ঘরকুনো এই অপবাদ কাটিয়ে উঠেছে অনেকটাই। এখন ছুটি পেলেই ঘুরতে যাওয়া আর বিলাসিতা নয়, জীবনকে উপভোগ করার একটা পথও বটে। ছোট্ট একটা দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। তাই দেশের মাঝে ভ্রমণ করতে হলে স্থল বা জলপথটাই যথেষ্ট।
তবে দেশের বাইরে যেতে হলে সেক্ষেত্রে আকাশ পথেই ভ্রমণ করতে হয়। কাজের প্রয়োজনে হোক বা আনন্দের উদ্দেশ্যে, প্লেনে ভ্রমণের আগে যদি আপনার কিছু বিষয় জানা থাকে তবে আপনার ভ্রমণটি আরও আনন্দদায়ক ও নির্ঝঞ্ঝাট হতে পারে। আসুন জেনে নেই সেই সবই।
● ভ্রমণের আগে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে রাখুন। এ জন্য ছোট পাউচ ব্যাগ বা হ্যান্ডব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। যদি বিদেশ ভ্রমণ করতে যান তবে আগে থেকে আপনার পাসপোর্ট, টিকেট ও অন্যান্য কাগজ ঠিক করে রাখবেন। সেই সাথে আপনার ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে তা সাথে নিয়ে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে।
● হোটেল বুকিং দেয়া থাকলে তার কাগজটাও সাথে রাখবেন। এছাড়া অন্যান্য কোন দরকারি কাগজ থাকলে সব এক সাথে এক ব্যাগের মধ্যে রাখতে পারেন। এসব কাগজের ফটোকপি করে নিতে ভুলবেন না অবশ্যই, কেননা জিনিসটি কখন কি কাজে লেগে যেতে পারে তা বলা যায় না আগে থেকে। দেশের ভেতরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে রাখতে পারেন।
● যদি এয়ারপোর্টে ফ্লাইট ছাড়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে পৌঁছান ভালো, তাই বলে বেশি আগে গিয়ে বসে থাকার কোন মানে নেই। বরং বেশি আগে পৌঁছে গেলে সময় কাটানো ঝামেলার বিষয় হয়ে যেতে পারে। তাই ফ্লাইটের সময়সূচি অনুযায়ী হিসাব করে ঘর থেকে বের হওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে যদি গভীর রাতের ফ্লাইট হয় তবে আগে পৌঁছানটাই ভালো হবে।
● এয়ারপোর্টে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করতে করতে সময় কাটানো বেশ ঝামেলার হতে পারে। তাই সময় কাটানোর জন্য সাথে কোন বই রাখতে পারেন। সেই সাথে ব্যাগে হাল্কা খাবার যেমন চকলেট, চিপস রাখতে পারেন। এয়ারপোর্টে বাইরের খাবার নিয়ে প্রবেশ নিষেধ থাকলে ভেতরের দোকান থেকেও কিনে নিতে পারেন।
● আপনার সাথে কোন মূল্যবান জিনিসপত্র থাকলে তা আপনার লাগেজে না রেখে আপনার কাছে হাত ব্যাগে রাখবেন। মনে রাখবেন অনেক সময় কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে লাগেজ হারানো যায়। আপনারটা কোনদিন যায়নি ভালো কথা, কিন্তু তার মানে এই না যে হারানো যেতে পারে না। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকা জরুরি।
● সেই সাথে এমন কিছু যদি সাথে থাকে যা ভেঙ্গে গেলে বা হারিয়ে গেলে রিপ্লেস করা সম্ভব না- যেমন ল্যাপটপ বা ক্যামেরা- তা নিজের সাথে রাখুন।
● প্লেনে বসে লম্বা ভ্রমণ করা কষ্টদায়ক বটে। তাই ভ্রমণকে আনন্দদায়ক করতে সাথে বই নিতে পারেন। এছাড়া সাথে ল্যাপটপ বা কোন গান শোনার যন্ত্র যেমন আইপড বা অন্য কিছু থাকলে তাতে আপনার পছন্দের গান ভরে নিতে পারেন, ল্যাপটপে নিতে পারেন সিনেমা ও ছোটদের জন্য কার্টুনের কালেকশন।
● সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে থাকলে ভ্রমণের জন্য পোশাকটিও ঠিক করে ফেলুন। ভ্রমণের জন্য ঢিলেঢালা পোশাক পড়তে চেষ্টা করবেন। জুয়েলারি, বেল্ট, অতিরিক্ত সাজগোজ এসব পরিহার করার চেষ্টা করবেন। লম্বা ভ্রমণের সময় এসব জিনিস শুধু ঝামেলাই বাড়াবে। ফ্ল্যাট জুতা বা স্যান্ডেল পরবেন যেন দরকার পরলে দ্রুত খুলতে পারেন। লাগেজে ও হ্যান্ড বাগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছুই নিতে যাবেন না।
● সাথে ছোট শিশু থাকলে তাদের প্রয়োজনীয় সব কিছু, যেমন- ডায়পার, দুধের বোতল, ন্যাপকিন ইত্যাদি সব সাথে নিয়ে নিন। কোনও জরুরি ওষুধ নিজের বা বাচ্চার প্রয়োজনে লাগলে সেটাও নিয়ে নিন। হাঁপানি রোগীরা ইনহেলার নিতেও ভুলবেন না।
ভ্রমণ হল আপনার মনের খোরাক। প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে দুই দণ্ড ভাল করে শ্বাস নেবার জন্যই ঘুরতে যাওয়া হয়। আপনার ঘোরাঘুরিকে আরও আরামদায়ক ও নিশ্চিন্ত করতে ও আকাশপথে ভ্রমনের ঝামেলা এড়াতে সব কিছু গুছিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন।
বিবার্তা/জিয়া