ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করার মতো। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, ডুলাহাজারা, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, হিমছড়ি ঝর্ণা, দরিয়ানগর, ইনানী সৈকত, বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরি, কাপ্তাইসহ বিনোদন স্পটে পর্যটকদের ঢল নেমেছে।
কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকদের ঢল। কাল শনিবার পর্যন্ত কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলে প্রায় কোন কক্ষ খালি নেই। সমুদ্র সৈকত, বিপণী কেন্দ্র ও রাস্তাঘাটে মানুষ আর যানবাহনের ভিড়। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ব্যবসায়ীদের যেন দম ফেরার ফুরসত নেই। তবে অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করা সত্ত্বেও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জলপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্টমার্টিন ভ্রমণেচ্ছু পর্যটকেরা হয়েছেন হতাশ।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান, এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে কয়েক লাখ পর্যটক এসেছেন কক্সবাজারে।
হোটেল মালিকদের মতে, ঈদের ছুটিতে গত দুইদিনে আড়াই লাখ থেকে তিন লাখ পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন। চলতি সপ্তাহজুড়ে আরো প্রায় তিন লাখ মানুষ কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, পর্যটকদের ঢল নেমেছে পাহাড়ি পর্যটন জেলা বান্দরবানে। এবারও ঈদের লম্বা ছুটিতে যান্ত্রিক জীবনের একটু ক্লান্তি দুর করতে বিনোদনের খোঁজে হাজারও মানুষ ছুটে আসেন পাহাড়ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক লীলাভূমি বান্দরবান শহরে। প্রতিবছরই ঈদের আগেরদিন থেকেই বান্দরবান শহরে হোটেল মোটেলে আগাম বুকিং থাকে। এ বছরও কোরবানির ঈদের টানা ছুটির সুযোগে হোটেল মোটেলগুলোতে আশানুরূপ বুকিং ছিল এবং পর্যটকদের ভিড় বাড়ে ক্রমেই।
বিনোদনের জন্যে পর্যটকরা মেঘলায় ঝুলন্ত সেতু, নীলাচল, নীলগিরি মেঘলার চিড়িয়াখানা, রামজাদি, বগালেক, শৈলপ্রপাত, নাফাখুমসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র ব্যবহার করছেন। প্রতিবছর দুই ঈদের টানা বন্ধে এসব বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের আগমন ঘটে বেশি। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে হোটেল মোটেলগুলোতে প্রায় সবগুলো কক্ষ এখন পর্যটকে ভরা। প্রায় ১৫দিন পর্যন্ত জেলার আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলো পর্যটকদের ভারে মহাব্যস্ত থাকবে।
চকরিয়া প্রতিনিধি জানান, দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক। ঈদের দিন মঙ্গলবার ও পরদিন বুধবার দর্শনার্থীদের তেমন উপস্থিতি চোখে না পড়লেও বৃহস্পতিবার থেকে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে পার্কে। আশা করা হচ্ছে সব মিলিয়ে লক্ষাধিক দর্শনার্থী ও বিভিন্ন জেলার পর্যটক পার্ক ভ্রমণ করবেন। এজন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি আগে থেকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো পার্ককে।
কাপ্তাই প্রতিনিধি জানান, কাপ্তাইয়ের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে ঈদের দিন গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে নারী পুরুষ শিশু কিশোরদের আনন্দ বিনোদনে মেতে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে কাপ্তাই আসেন। আবার কেউ কেউ রিজার্ভ বাসে চড়েও ভ্রমণে আসেন। অনেককে দেখা গেছে ইঞ্জিন বোটকে আকর্ষণীয় সাজে সজ্জিত করে কর্ণফুলী নদীতে নৌ বিহার করতে করতে কাপ্তাই আসেন। অনেক তরুণকে মিনি ট্রাকে সাউন্ড বক্স ফিট করে উচ্চৈস্বরে নেচে গেয়ে হৈ চৈ করতে করতে রাজপথে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
বিবার্তা/জিয়া