আপনি বার্সেলোনায় ২ মাস থাকুন আর ২ সপ্তাহ, সবসময়ই আপনি কিছু না কিছু পাবেন, যা আপনাকে চমকে দেবে। বার্সেলোনা সবসময়ই আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করতে, আপনাকে উপভোগের উপকরণ দিতে সক্ষম। এখানে আছে বিভিন্ন রকম আর্ট মিউজিয়াম, চমৎকার সব স্থাপত্য আর ইতিহাস আর ঐতিহ্যের অনন্য মিশ্রণ। আসুন জেনে নিই, বার্সেলোনা ভ্রমণে গেলে কোন জায়গাগুলো মিস করা যাবে না একদমই।
সাগ্রাদা ফেমিলিয়া: লা সাগ্রাদা ফেমিলিয়া বার্সেলোনার সবচেয়ে বড় পর্যটক আকর্ষণ। এখানে প্রতি বছর ২.৮ মিলিয়ন দর্শনার্থী ভিড় করে। এটি একটি বিশাল ইন্ট্রিকেট বাসিলিকা যা এন্টনি গউডি নকশা করেছেন। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৮৮২ সালে এবং এখনো চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, দালানটি আগামী ৩০ বছরের মাথায় বানানো শেষ হবে! অবশ্যই এর নির্মাণশৈলী এবং বিচিত্র বিন্যাস আপনাকে মুগ্ধ করবে। আকর্ষণীয় বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ নকশা কাঠামো লা সাগ্রাদা ফেমিলিয়াকে করেছে অভূতপূর্ব সৌন্দর্যের অধিকারী।
কাসা মিলা: ১৯০৬ সাল থেকে ১৯১০ সালের মাঝে এর নির্মাণ। কাসা মিলা বা লা পেডেরা ছিল সর্বশেষ নাগরিক কাজ যা নকশা করেছেন কাটালান স্থাপত্যশিল্পী এন্টনি গউডি। রঙিন বাড়িটিকে মনে করা হয় শিল্পীর মনের রঙ এবং শিল্পবোধের শ্রেষ্ঠ বহিপ্রকাশ। এর নির্মাণশৈলী আপনাকে বাকরুদ্ধ করে দেবে। ইন্টেরিয়র চমৎকার অবকাঠামোর পাশাপাশি মুগ্ধতা অপেক্ষা করছে ছাদের গঠনেও। গউডির সৃষ্টির অনন্যতা আপনার চোখে পূর্ণতা পাবে এই দালানে।
কাসা বাটলো: মনে করা হয়, কাসা বাটলো ১৯ শতাব্দির একটি বিল্ডিং। এটি বার্সালোনায় গউডির তৈরি করা অসংখ্য দালানের একটি। দালানটি যেমন চমৎকার, তেমনি অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এর ছাদে প্রবেশের মুখে অপূর্ব নকশা করা পিলার দুটি এর মূল আকর্ষণ। এর ইন্টেরিয়র যেমন জটিল তেমনি শৈল্পিক। আর বাইরের অবকাঠামো তো মনে করিয়ে দেয় রূপকথার পরীর দেশের কথা।
পার্স গুয়েল: এটিও স্থাপত্য শিল্পী গউডির সৃষ্টি। প্রথমে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় আবাসিক এলাকা হিসেবে। কিন্তু দুটি দালান নির্মাণের পরই পুরো জমিটি শহর কর্তৃপক্ষের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। এবার এখানে গড়ে ওঠে চমৎকার একটি পার্ক। পার্স গুয়েল এখন জনপ্রিয় পর্যটক আকর্ষণ। এর আশপাশের চমৎকার প্রকৃতি, রঙ্গিন শহুরে দৃশ্য আর ক্যাসলের মত নির্মিত দালান মানুষকে জাদুকরি আনন্দের অনুভূতি দেয়।
বার্সেলোনেটা: বার্সেলোনার চমৎকার ৭টি বীচের মধ্যে ৪.৫ কিলোমিটার বিস্তৃত উপত্যকার বার্সেলোনাটা সবচেয়ে সুন্দর। এটা এই অঞ্চলের অন্যতম বড় পর্যটক আকর্ষণ। সবচেয়ে জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি এটা সবচেয়ে কাছেরও। ১১০০ মিটার (৩৬০০ ফুট) লম্বা বালুকা বেলা অভাবনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্যের সমাহার ঘটায়। এর পরিচ্ছন্ন বাতাস শ্বাস নিতে শহরবাসীরা ছুটে আসে প্রতি সকালে। কেউ কেউ ব্যায়াম, জগিংয়ের জন্য বেছে নেয় জায়গাটিকে।
লা রাম্বলা: রঙিন একটি শহর, দূরে পাহাড়ের হাতছানি, লা রাম্বলা বিখ্যাত এই শহুরে পথগুলির জন্য। এখানে একটি দুটি নয় বেশ কিছু সড়ক রয়েছে যার বিন্যাস নাটকের অংকের মতই রোমাঞ্চকর। রাস্তার দুইপাশে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট যা দেখলেই ভরা পেটে আবার ক্ষুধা পাবে আপনার, আছে বার, যেখানে একবার হলেও উঁকি দিতে চাইবেন আপনি। আছে কেনাকাটার জায়গা, দেখা মিলবে স্ট্রিট পারফরমারদের।
বিবার্তা/জিয়া