মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী জিনিস (জিহ্বা) এবং দুই উরুর মধ্যবর্তী জিনিসের (লজ্জাস্থান) হেফাজতের নিশ্চয়তা দিবে। আমি তার জন্য, জান্নাতের নিশ্চয়তা দেব।’
হাদিসে বর্ণিত এই তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমান সমাজের বাস্তবতা হচ্ছে, দুনিয়ার যত গোনাহ, মারামারি, কাটাকাটি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জেল-জুলুম, খুন-খারাবি, নারী-নির্যাতন, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা থেকে শুরু করে যত ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়- তার প্রধান কারণ এ দুটিই জিনিস।
যেমন, জিহ্বার অসংলগ্নতা- যাতে খারাপ ভাষা যেমন সম্পৃক্ত, তেমনি পেটের চাহিদা পূরণ করার জন্য কৃত অপরাধ কিংবা কুপ্রবৃক্তি। মানুষ যদি নামাজ-রোজা ইত্যাদি ব্যক্তিগত আমলে ত্রুটি করে তবে তার কুফল ও পরিণতি ওই ব্যক্তি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। অথচ জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের অসংলগ্নতার কারণে সমাজের সর্বত্র এর কুপ্রভাব বিস্তার লাভ করে। এমনকি অবশেষে তা পুরো সমাজকে ধ্বংসের অতলে ডুবিয়ে ছাড়ে। সুতরাং ইসলাম উপযুক্ত কারণেই এ দুটি অসংলগ্নতা দূর করার শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ আহকাম দান করেছে।
এ লক্ষ্য অর্জনের জন্যই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে নবী! আপনি মুসলমানদের বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। এটা তাদের জন্য পবিত্রতার মাধ্যম। নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছু জানেন যা কতিপয় লোক করে থাকে।’ [সুরা আন নূর: ৩০]
কোরআনে কারিমে বারবার সমগ্র সমাজ কাঠামোতে মানুষের কামনা-বাসনা, পূতপবিত্র রাখার জন্য প্রচার মাধ্যমকে সর্তক করা হয়েছে। এ জাতীয় অসংখ্য নির্দেশনা দ্বারা মানুষের কান, চোখ অন্তর এবং তার সমস্ত ধ্যানধারণার ওপর আল্লাহর ভয় ও পরকাল ভাবনার ব্যাপারটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এত কিছুর পরও যদি কোনো সুযোগ তালাশের মাধ্যমে অসদুপায় অবলম্বন করে- তবে তার জন্য রয়েছে ভয়াবহ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
বিবার্তা/জিয়া