হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, এ জন্মের পাপই নির্ধারণ করে দেয় পরের জন্মে মানুষ কী হয়ে জন্মাবে। মানুষ যতই চেষ্টা করুক না কেন কর্মফল কখনোই বর্তমান জন্মে ভোগ করা যায় না। ভালো-খারাপ দুই ধরনের কাজেরই ফলাফল মেলে পরের জন্মে। শুধু তাই নয়, বর্তমান জন্মও প্রভাবিত হয় পূর্বজন্মের কৃতকর্ম দিয়ে।
অর্থাৎ পরবর্তী জন্মের আগেই, পূর্বজন্মের কর্মফল অনুযায়ী ঠিক হয়ে যায়, পরের জন্মে কোন অবতারে জন্মগ্রহণ করবে একজন মানুষ।
বহু প্রাচীন গ্রন্থমতে, একটি মানব জন্ম পেতে গেলে তার আগে ৮৪ হাজার বার মানুষকে জন্মাতে হয়। এককোষী প্রাণী থেকে শুরু করে প্রায় পৃথিবীর যাবতীয় জীবজন্তুর রূপে জীবন কাটিয়ে তবেই পাওয়া যায় মানবজীবন।
এই নিয়ে বিস্তারিত বলে গেছেন মহর্ষি বেদব্যাস এবং অন্যান্য ঋষিরা। এমন বেশ কিছু পাপের পরজন্মের ফল উল্লিখিত রয়েছে হিন্দু পুরাণে। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেয়া হলো-
১. খুনের জন্য অত্যন্ত কড়া শাস্তির বিধান দেয়া রয়েছে। এই কাজ করলে পরের জন্মে গাধা হয়ে জন্মাতে হবে। দিনরাত মালিকের অত্যাচার এবং অতিরিক্ত বোঝা বহন করাই হবে তার কৃতকর্মের ফল।
২. কোনো পুরুষ যদি ধর্ষণ করে তবে পরের প্রথম জন্মে তিনি হবেন নেকড়ে, দ্বিতীয় জন্মে শেয়াল, তৃতীয় জন্মে শকুন, চতুর্থ জন্মে সাপ এবং পঞ্চম জন্মে সারস।
৩. সোনা চুরি করা পুরাণ মতে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এমন কাজ যে করবে তাকে পরের জন্মে পোকা হয়ে জন্মাতে হবে। পাশাপাশি, যদি কেউ রুপা চুরি করে, তাকে পরের জন্মে পায়রা হয়ে জন্মাতে হবে।
৪. কারো পোশাক চুরি করা বা কারো শরীর থেকে পোশাক টেনে নেয়ার মতো ঘৃন্য কাজ করলে সেই ব্যক্তিকে পরের জন্মে টিয়াপাখি হয়ে সারাজীবন খাঁচাবন্দি অবস্থায় কাটাতে হবে।
৫. যিনি পরিবারের বা পরিবারের বাইরের বায়োজ্যেষ্ঠ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং সর্বসমক্ষে অপমান করেন তাকে পরের জন্মে কাক হয়ে জন্মাতে হবে এবং কাকরূপে তাকে অন্তত ১০ বছর থাকতে হবে।
বিবার্তা/নিশি