অনেকে মনে করেন সঞ্চয়ী হওয়া মানে কৃপণতা। কিন্তু তাই কি! সঞ্চয়ী হওয়া মানে কৃপণতা! মোটেই নয়, সঞ্চয়ী হওয়া মানে ভবিষ্যতের জন্য ভাবা। আমরা কেউই আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানি না। তাই ভষ্যিতের জন্য ভাবতে হবে বর্তমানেই। কথায় আছে ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবা বুদ্ধিমানের কাজ। আজ আপনার অঢেল সম্পদ আছে কাল নাও থাকতে পারে। বলছি না যে থাকবে না।
দুর্ঘটনাবশত একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতেই পারে! হতে পারে কোনো অসুখ বিসুখও। তখনতো অন্যজনের কাছে হাত পাততে হবে। তাই একটু একটু করে জমানোর অভ্যাস করা ভালো নয় কি? কিংবা বেতনটা পেতেওতো দেরি হতে পারে। এদিকে দশ তারিখ না হতেই বাড়িওয়ালার সংকেত। তাই একটু মিতব্যয়ী হয়ে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সঞ্চয় করুন।
মনে রাখবেন এক থেকেই একশ হয়। আগের যুগে মা-দাদিরা মুষ্টি চাল রেখে দিতেন বিপদের সময় কাজে লাগানোর কথা ভেবে। সেভাবেও শুরু করতে পারেন।
প্রথমে অভ্যাসটা গড়ে তুলতে হবে নিজের মধ্যে। শুধু নিজের মধ্যে নয় পরিবারের সবার মধ্যেও এ অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো বাদ দিন। প্রয়াজন আর অপ্রয়োজনের পার্থক্যটা পরিবারের সবাইকে বোঝান। যেমন- বন্ধুদের সাথে আড্ডা একদিন দেওয়া যায়, প্রতিদিন নয়। আর আড্ডা মানে নিশ্চয় শুধু মুখে বসে থাকা না!
বাজারে যাওয়ার সময় তালিকা তৈরি করে নিয়ে যান। তাহলে দেখবেন উল্টোপাল্টা কেনাকাটা কম হবে। যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু কিনবেন। প্রয়োজনে সামনের মাসে আবার কিনবেন। আর যদি বেশি কিনলে সস্তা পান তাহলে সামনের মাসের জন্য সেটা আলাদা করে তুলে রাখুন। মনে রাখবেন বেশি থাকলেই বেশি খরচ হবে।
খুব ভালো হয় যদি ব্যাংকে একটা ডিপএস একাউন্ট করতে পারেন। বড় অঙ্কের করতে হবে এমন কোনো মানে নেই। যতটা আপনি ম্যানেজ করতে পারবেন। ঠিক ততটাই করবেন। তাহলে হবে কী আপনাকে অনেকটা বাধ্য হয়েই টাকাটা প্রতিমাসে জমা দিতে হবে। দেখবেন মেয়াদ শেষে এই অল্প অল্প করে জমানো টাকা কতটা বড় হয়ে যায়। বিপদের সময় হোক কিংবা কোনো একটা শখ পূরণ করতে পারবেন সেই টাকাটা দিয়ে। কিংবা কোথাও বেড়াতে গেলেন।
যদি সম্ভব হয় এক মাসের বাসা ভাড়ার টাকা আগাম আলাদা করে তুলে রাখুন। তাহলে আর বাড়িওয়ালার সামনে অস্বস্তিতে পড়তে হবে না।
সবার হাত খরচ মাসের শুরুতেই দিয়ে দেন। বলে দেন কেউ যদি এ থেকে সামনের মাসও কিছুদিন চলতে পারে তাহলে তার জন্য পুরষ্কার আছে। কি সেটা! হতে পারে তার পছন্দের খাবার খাওয়ানো হল। কিংবা কিছু একটা কিনে দেওয়া হল। এ থেকে সে মিতব্যয়ী হতে আগ্রহী হবে।
অফিসে যাওয়ার সময় বা বাইরে কোথাও বের হলে হাতে একটু সময় নিয়ে বের হন। না হলে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আপনাকে রিক্সা বা সিএনজি নিতে হতে পারে। কাছে কোথাও গেলে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে শরীরটাও ভালো থাকবে।
আবারো বলছি সঞ্চয় করা মানে কিন্তু কৃপণতা করা নয়। তাই এমনভাবে সঞ্চয় করবেন না যাতে আপনার প্রতি আবার অন্যদের বিরূপ ভাবনার সৃষ্টি হয়। তাই করতে হবে অল্প অল্প করে। সব প্রয়োজন মেটানোর পরে।
আরিফুন নেছা সুখীর ব্লগ থেকে
বিবার্তা/মহসিন