অনেকদিন পর ফিরে এলাম ব্লগে। ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত জীবনে দম ফেলার সময়টুকু কই? ব্যস্ততার চেকলিস্ট অনুযায়ী প্রতিটিদিন দৌড়াচ্ছি। সব কাজ যেন সুনিপুণভাবে, সঠিকভাবে শেষ করে তবেই শান্তি। এই এতসব পারফেকশনের মাঝেও কোথায় যেনো একটু কমতি রয়ে গিয়েছে। নিজেকে প্রশ্ন করে জানলাম, দিন শেষে হ্যাঁ, আসলেই আমি বড় একা। এই একাকীত্বের ছোবল থেকে বাঁচার জন্যেই আজকের এলোমেলো কথার আশ্রয় নেয়া।
বেশ কিছুদিন থেকেই ভাবছি, দেশের বাইরে চলে গেলে কেমন হয়? কানাডা কিংবা অস্ট্রেলিয়াতে ইমিগ্রেশনতো এখনো চালু রয়েছে। এই ইমিগ্রেশন বা দেশান্তরী- যে নামেই ডাকা হোক না কেন, সত্যি বলতে কি, বাংলাদেশের অস্থির আর অসুস্থ পরিবেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে মুক্তি পেতে চাচ্ছি।
খানিকটা সেলফিশের মতো শোনালো কি? হবে হয়তো। মাঝে মাঝে ভাবি, দেশেইতো বেশ আছি। বাইরে গিয়ে কি হবে? খাটাখাটনি হবে। কিন্তু খাটাখাটনি কি বাংলাদেশেও কম করছি? তা তো নয়। বরং সারাদিনের পরিশ্রমের শেষে মাসের বেতনটা নিয়ে যখন ট্রেনে উঠলাম বাসায় ফিরবো বলে, ট্রেন থেকে নেমে দেখি আমার পুরো মাসের বেতন আর মোবাইল ফোনটা কেউ একজন স্বযত্নে আমার হ্যান্ড ব্যাগটা কেটে নিয়ে নিয়েছে।
প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে সেদিন রিক্সা নিয়ে যাচ্ছিলাম। পাশের রিক্সার দুই উঠতি বয়সের যুবক আমাকে দেখে বিশ্রি একটা হাসি দিয়ে বললো, ‘মালটা তো জোস। বুকের কাপড়টা ঢাইকা রাখছেন কেন? সরাইয়া দ্যান।’
উপরের ঘটনাগুলো থেকে ‘খুব খারাপ লেগেছে’ - কথাটা অল্প শোনালেও আমার মতো হাজার হাজার মানুষের জীবনে যখন প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটছে তখন কে শুনবে আমাদের কথা?
পুলিশ? হাসলাম কিন্তু জোরেই। যে দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ দুর্নীতির বেড়া জাল, সেখানে পুলিশের কাছে যাওয়া আর মিরপুর চিড়িয়াখানার ক্ষুধার্ত বাঘের খাঁচায় ঢুকে পড়া সমান কথা।
কাজেই এবার অনেকটা উঠে পড়েই লাগলাম ইমিগ্রেশনের পেছনে। আপাতত কানাডা'র ইমিগ্রেশন নিয়ে পড়াশুনা আর খোঁজখবর করছি। পাঠক, আপনাদেরও সাহায্য প্রার্থনা করলাম। যদি তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন তো উপকার হয়। ভালো থাকবেন সবাই।
সাদিয়া স্বাতীর ব্লগ থেকে
বিবার্তা/জিয়া