চিঠি

চিঠি
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০১৬, ১১:২০:০৪
চিঠি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+
তোমাকে যখন প্রথম দেখি, চোখ ফেরাতে পারছিলাম না, এত বেশি সুপুরুষ আমি আগে কখনো দেখিনি, লম্বা, ফর্সা, উঁচু কপাল, লম্বা চোখা নাক, ঠোটের বাম সাইডে একটা বাঁকা দাঁত কথা বললেই দেখা যায়, আশ্চর্য আমার কাছে সেটাও বেশ সুন্দর লাগছিলো। 
 
এত রুপবান তো মেয়েরা হবে, ছেলেদের চেহারায় এত রুপ তো ঠিক না। আমি চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলাম বার বার, না জানি আমার নজর লেগে যায় তোমার উপর। 
 
তোমার হাটা কথা বলা দেশ বিদেশ ঘোরা, ড্রাইভ করা, ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন করা, গোল্ড মেডেল পাওয়া ছাত্র! উচ্চতর ডিগ্রি পেতে আরও স্টাডি, জব!! বেশ কিছু বিদেশি এরাবিক, ইংলিশ, ফরাসি ভাষায় কথা বলা, এসকল কিছু আমার কাছে ছিল বিস্ময়।
 
বিশ্বাস কর যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছি সেই দিন থেকে পুরো দুইদিন আমি তোমার ভাবনায় বুঁদ হয়েছিলাম। সারা মন জুড়ে তোমার ভাবনা, যেদিকে তাকাই শুধু তুমি তুমি তুমি। 
 
মনের টানেই কিনা কে জানে তুমি কি করে যেন আমার বাসার ল্যান্ড লাইন জোগাড় করে ফোন করলে, তখন আমার মোবাইল ছিল না, সদ্য এইচএসসি পাশ করা মেয়ে আমি।
 
তুমি প্রথম থেকে শুরু করে এখনো বল তুমি আমায় ভালবাসতে শিখিয়েছ, কিন্তু তুমি তো জানো না আমি তোমাকে দেখার দুই দিনের মধ্যেই কোনো এক অলৌকিক টানে, তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। এসব বললেই তুমি বল আর আমি তো তোমাকে না দেখেই তোমার প্রেমে পড়েছিলাম, তোমার গল্প শুনেই। তোমার সাথে কথায় কে পারবে। 
 
 
তোমার আমার ভালোবাসা মোবাইলে মোবাইলে রয়ে গেলো সেই থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত। কয়বার দেখা হয়েছে হাতে গুনে তারিখ সহ বলে দিতে পারব, যেমনটা তুমি পারো। ওই যে তোমার বিদেশ, চাকরি বাকরি লেখাপড়া, সেটাই আমার কাল হয়ে আছে। সাথে কাল হল তোমার অসুস্থতা। 
 
সেদিন যখন তুমি একদম একা মাউণ্ট এলিজাবেথ হসপিটালে সেন্সলেস হয়ে পড়েছিলে ৫ ঘণ্টা, আমি দেশে আমার অফিসে বসে কাজ করতে করতে ছটফট আর অস্থির নিজের হৃদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছিলাম। এরকম তো প্রায়ই হয় তবু কেন জানি ভীষণ ভয় আমাকে ঝেঁকে ধরেছিল। 
 
আর তারপর দীর্ঘ এক যুগ পর যেন তোমার কল এলো আর তুমি টেনে টেনে দুর্বল কণ্ঠে কথা বলতে লাগলে। ওই মুহূর্ত ছিল তুলনাহীন। যখন তুমি বললে জান ডাক্তার বলেছে আমার আধা ঘণ্টা আগে জ্ঞান ফিরেছে ওরা বলেছে এটা গুড সাইন।
 
আমি বললাম আমার সমস্ত আয়ু দিয়ে আল্লাহ তোমাকে বাঁচিয়ে রাখুক। তুমি মানতে চাও না এরকম কথা এলেই তুমি বল আমাদের বংশে ছেলেরা আগে মরে যায়। কেন তুমি এরকম বল! এত স্বার্থপর কেন তুমি!! 
 
ফোন রেখে ঝর ঝর করে প্রান ভরে কাঁদলাম। জান হাম পেয়ার তুমহে বেসুমার কারতে হে অ্যায় সানাম হাম তো স্রিফ তুমসে পেয়ার কারতে হে।
 
ইতি সামিয়া’র ব্লগ থেকে
 
বিবার্তা//মহসিন
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com