প্রায় বেশিরভাগ পরিবারে শেষ বয়সে অবহেলার স্বীকার হন মা- বাবা। কিন্তু কেন এই অবহেলা? কেন তাদের হেয় করা? অতি স্নেহে আদরে যাদেরকে বড় করে তুলেন তাঁরাই কেন তাদের দুঃসময়ে বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা দেখান। নিজে কষ্ট করে যে বাবা তাঁর ছেলের খরচ চালিয়ে যান দিনের পর দিন, সেটাই কি ছিল তার অপরাধ? বছরের পর যে বাবা একটা পুরোনো জুতো পড়ে অফিস করে ছেলের পরিক্ষার খরচ চালিয়ে যেতেন, নিজে না খেয়ে ছেলেকে টাকা পাঠাতেন, যাতে সে অন্যান্য বন্ধুদের কাছে ছোট না হয়, সেটা হয়তো ছিল তাঁর অপরাধ।
জন্মদাত্রী মা যে কিনা শিশুকাল থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত ছায়ার মতো লেগে থাকতো সন্তানের সেবায় সেই মা ই বা কী এমন ভুল করেছিল? যার প্রতিদানে সেই মায়ের স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রমে। একজন মা কিনা করে তাঁর সন্তানের জন্য, নিজে না খেয়ে অন্ন তুলে দেন সন্তানের মুখে সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে, একটা সন্তানকে বড় করে তুলতে কত কষ্ট ই না করতে হয় মাকে। সেটা শুধুমাত্র একজন মা ই অনুভব করতে পারেন, তবুও সেই মা একটুও ক্লান্ত হন না, হাসিমুখে সন্তানের সেবা করে যান দিনের পর দিন। কোনো দিন দেখা যায় শেষ রাতে কান্না করে শিশু সন্তানটি, সাথে সাথে মায়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়, সন্তান কে জড়িয়ে আদর করেন, আবার তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেন। শুধু তাই আরো কত কষ্ট করতে হয় মাকে সেটা হয়তো লিখে শেষ করা যাবে না কখনো।
অসহায় মা বাবাকে অবজ্ঞা করা উচিত নয়, কারণ মানুষ মাত্রই জীবনের কোনো না কোনো সময় অসহায়ত্বের স্বীকার হতে হবে। আপনারও ছেলে আছে, কিংবা আপনি এখন বিয়ে করেছেন আপনারও ছেলে হবে, সে যে আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে না সেটার কী কোনো নিশ্চয়তা আছে? দুনিয়ার সব মা-বাবার জন্যে শুভকামনা, কোনো মা বাবার স্থান যেন বৃদ্ধাশ্রম না হয়।
মমিতা’র ব্লগ থেকে
বিবার্তা/মহসিন