হরতালের কথা শুনলে আমার হার্টের বিট বেড়ে যায়। কারণ হরতালের জন্য অনেকের মতো আমিও ‘এইডসে’ আক্রান্ত হই। এই ‘এইডস’ অ্যাকোয়ার্ড ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোমের (acquired immune deficiency syndrome) চেয়েও ভয়াবহ! কারণ এই এইডসের আসল নাম হচ্ছে ‘অ্যাকিউট ইকোনমিক ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম’(acute economic deficiency syndrome)— মুণ্ডমালটা দাঁড়ায় ‘এইডস’।
মাগার কোনো চিন্তা নেই। ‘চলেবল’ (বাংলা চল + ইংরেজি able) একখান দোস্ত জুটে গেছে। ‘চাড্ডা’ (চায়ের আড্ডা) আর ‘চাফি’ (চা + কফি) চলছে দেদারসে। সিগারেটের কথা বলে লাভ নেই। আমরা আছি বলেই তামাক-বেনিয়াদের প্রসার বাড়ছে!
তারপরও এইডসের কারণে আমি অস্থির পঞ্চমে। কেউ পকেটের তবিয়ত জানতে চাইলে ‘থার্টি টু অলআউট’ (বত্রিশ দাঁত) করে কিছু কানলাল করা বিশেষণ (নাকি খিস্তি-খেউড়!) শুনিয়ে দিই।
এইডসের জন্য আমারে দোষ দিয়ে লাভ নেই ভাইয়া!
স্বপ্নময় চক্রবর্তী তাঁর ‘চলো দুবাই’ গ্রন্থে বেশ রসিয়ে রসিয়ে লিখেছেন ‘রোজগারপাতি একদম নেই। পুরো এইডস— অ্যাকিউট ইকোনমিক ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম।’ অতএব এইডসের কথা লিখে এই নাদান বান্দা কোনো গোস্তাকি করেনি!
প্রতিদিন এগার নম্বর বাসে যাতায়াত করি। ঢাকা মেগাসিটির যানজটে দুখানি শ্রীচরণই আমার ভরসা! আতঙ্কের ব্যাপার হচ্ছে, শুনলাম দেশে নাকি গ্যাস ফুরিয়ে আসছে। তাহলে পাবলিক কী লোডশেডিংয়ের কথা ভুলে ‘গ্যাসশেডিং’ শব্দটি শুনে ইন্নালিল্লাহি বলবে? কিন্তু তাতেও যে রক্ষা নেই!! হয়তো ‘কেরোশেডিং’ (কেরোসিনের অভাব) শব্দটিও পাবলিকের জিভের ডগায় লাফাবে। নারদ! নারদ!!
নজরুল ‘আন্দাজিক্যালি’ আর ‘কেলেঙ্কারিয়াস’ শব্দ দুটি উদ্ভাবন করেছেন। আর সত্যজিৎ রায় চালিয়েছেন ‘খেপচুরিয়াস’ শব্দটি (খেপে যাওয়া + ইংরেজি প্রত্যয়)। রাজনীতিবিদরা জাতিকে নতুন কোনো শব্দ উপহার দেবেন ‘মোসাদ’ ছাড়া! না থাক, আগে বলে ঝামেলা বাঁধিয়ে লাভ নেই। গণতন্ত্র ফারুকের সঙ্গে দৌড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে এখন হেঁচকি তুলছে!!
‘চার’ আর ‘মহা’র মাঝে আমি কোনো ‘তফারেন্স’ (আরবি তফাত্ + ইংরেজি ডিফারেন্স) দেখতে পাইনে। চোখের ডিসটার্ব বোধহয় নষ্ট হয়ে গেছে! শুনেছি আবুল মাল সাহেব দিলদার হয়ে এবারও কালো টাকা ‘দখুপাই’ (বাংলা দখল + ইংরেজি অকুপাই) করার সুযোগ দেবেন। মাশাআল্লাহ! আচ্ছা ‘ইমপসিবল সমাস’ হিসেবে বাজেটকে কি ‘বাঁজা মেয়ের পেট’ বলা যায়?
থাক, এসব বেয়ারিং ল্যাংগুয়েজ। সংসদে ‘এইডস’ বিষয়ক কোনো আইন পাস হলে আওয়াজ দিয়েন!!!
জিয়াউদ্দিন সাইমুমের ব্লগ থেকে
বিবার্তা/জিয়া