‘বিউটি টু ডিউটি’ বা ‘সুন্দর-বন্দর’ থেকে ‘শুল্ক-বন্দর’-এ দুঃখজনক অবতরণই নাকি ফুটবলের প্রকৃত ইতিহাস!
যেদিন থেকে ক্রীড়া পরিণত হলো শিল্পে, সেদিন থেকে ক্রীড়ার মূলে ফুটে থাকা নান্দনিকতার ফুলটিও খসে পড়েছে। ব্যর্থতাকে পেশাদার ফুটবল মাফ করতে জানে না। কারণ পেশাদারিত্বের নিক্তিতে ব্যর্থতাকে মাপার সুযোগ কম।
ক্লাব মালিকরা কোচের কানের গোড়ায় সবসময় ফিসফিস করে বলেন, ‘মনে রেখো অযোগ্যের পরিত্রাণ নেই। শিরোপা দিতে না পারলে তোমার চাকরি নট।’
শিশুর ঘুড়ি উড়ানো অথবা বল নিয়ে বেড়াল ছানার উদ্দাম লুটোপুটিও খেলা হতে পারে। তবে তাতে রেফারি থাকে না, থাকে না টাকার স্রোত। ওতে নির্মল আনন্দ থাকতে পারে, কিন্তু কেউ তো ওখান থেকে দু পয়সা কামাতে পারে না।
সন্দেহ নেই, ফুটবল আজ বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি, জাঁকালো এক প্রদর্শনী। এটা এখন বিশ্বের লাভজনক ব্যবসাগুলোর অন্যতম। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এ ব্যবসার মূল টার্গেট ফুটবলের উন্নয়ন নয়, এটাকে টেনে ধরে রাখা।
খেলোয়াড়দের কাছ থেকে জোর করে পারফরমেন্স আদায় করা। ফুটবলের এ বিবর্তনের জন্য ব্যবসায়ীদের তেমন কিছু করতে হয়নি। প্রযুক্তির উৎকর্ষই ফুটবলকে দিয়েছে আলোর গতি, দানবীয় শক্তি। ফুটবলের এ প্রবণতার কারণে নির্মল আনন্দ আজ উপেক্ষিত, ফ্যান্টাসি নিহত আর ফুটবলারদের সহজাত সাহসিকতা রীতিমতো বেআইনি।
তারপরও গ্যালারিতে দশর্কের ঢল নামে। ভক্তরা উন্মত্তের মতো চেঁচায়। আর নব্বই মিনিটের স্বাধীনতাকে বগলদাবা করে রেফারি মাঠ জুড়ে দৌড়ান। হুইশেল বাজে। ডিফেন্ডার ফ্রি-কিকের প্রস্তুতি নেন।
জিয়াউদ্দিন সাইমুমের ব্লগ থেকে
বিবার্তা/জিয়া