বিড়াল শব্দটি অর্বাচীন সংস্কৃত। সংস্কৃতে বিড়ালের প্রতিশব্দ মার্জার। তবে ‘বিলার’ বা ‘বিড়াল’ শব্দটি সংস্কৃতে নেই- এটা দাবিরও সুযোগ নেই।
অবশ্য বাংলা ভাষায় ‘বিড়াল’ শব্দটিকে আপন করে নেওয়া হয়েছে। তামিল ভাষায় ‘পুলই’ বা ‘বলই’ অর্থ বিড়াল। আবার তেলেগু ভাষায় ‘বিল্লি’ বা ওড়িয়া ভাষায় ‘বিলেই’ মানে বিড়াল। হিন্দিতে ‘বিল্লি’।
অবশ্য পালি, বৈদিক ও প্রাচীন সংস্কৃতে বিড়াল শব্দটি নেই। বোঝা যাচ্ছে, ‘মার্জার’ শব্দটি বয়সে অনেক বড়। কিন্তু বাংলায় মার্জারের চেয়ে বিড়াল শব্দটাই বেশি পরিচিত এবং আদরের।
বাংলায় একটি প্রতিষ্ঠিত প্রবাদ বাক্য হচ্ছে ‘বিড়ালতপস্বী’। বকধার্মিক বা ভণ্ড যোগী অর্থে বাংলায় বিড়ালতপস্বী শব্দটি বাংলায় চালু রয়েছে (বাপ অসৎকর্মে রত হইয়া নীতি উপদেশ দিলে ছেলে তাহাকে বিড়ালতপস্বী জ্ঞান করিয়া উপহাস করিবে- আলালের ঘরের দুলাল)।
বিড়ালের একটি বিশেষ ধ্যানমগ্ন অবস্থা অনুকরণে বিড়ালতপস্বী শব্দটি চালু হয়। বিড়াল ইঁদুরের অপেক্ষায় যখন ওঁৎ পেতে বসে থাকে তখন তার বাহ্যিক অবয়ব দেখে এটা মনে হয় যেন অহিংসাই তার পরম ধর্ম। এ প্রসঙ্গ থেকেই ভণ্ড অর্থে বিড়ালতপস্বী শব্দটি এসেছে।
এক সময় বিড়ালতপস্বী অর্থে ‘বিড়ালসন্ন্যাসী’ শব্দটি চালু ছিল (তথা গিয়া উত্তরিল বিড়ালসন্ন্যাসী- কাশীদাসী মহাভারত)। কিন্তু শব্দটি এখন আর চোখে পড়ে না।
জিয়াউদ্দিন সাইমুমের ব্লগ থেকে
বিবার্তা/জিয়া