সুস্পষ্ট শ্রেণীগত অবস্থান, ওই বিত্তশালীরা এভাবেই চ্যাংদোলা করে দোলাচ্ছে সর্বহারা শ্রেণীকে। তাদের দেখিয়ে করছে কথিত সামাজিক ব্যবসা... শিশুটির মুখে আতঙ্কের ছাপ সুস্পষ্ট, আর পৈশাচিক হাসি জাগো'র ভলেন্টিয়ারদের চোখে মুখে।
সম্প্রতি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জাগো ফাউন্ডেশন( S–8027(48)/08) এর আইসিটি বিভাগের অনুদান প্রাপ্তির খবরে [ http://tinyurl.com/hm4h64d ] আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই জাগো ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখসান্দ এর অতীতের আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বিরোধী নানা কাণ্ড তুলে ধরে এই অনুদান প্রাপ্তির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আমি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে গিয়ে কিছু ইনফরমেশন পেলাম। খোঁজ নিয়ে দেখলাম জাগো ফাউন্ডেশন কাজ করছে Office of Registrar of Joint Stock Companies and Firms’ অধীনে এক ধরণের non-profit organization হিসেবে,যা THE SOCIETIES REGISTRATION ACT,1860 [http://bdlaws.minlaw.gov.bd/pdf_part.php?id=10] এ নিবন্ধিত। নিবন্ধন নাম্বার S–8027(48)/08। তার মানে এই জাগো ফাউন্ডেশন একটি সোসাইটি হিসেবে RJSC-তে নিবন্ধিত।
এই ধরণের সোসাইটির RJSC-তে প্রতি বছর কোন এনুয়াল একাউন্টস/অডিটেড একাউন্টস সাবমিট করার কোন বিধান নাই ; সেজন্য এদের কোনো জবাবদিহিতারও থাকে না। এই সুযোগে জাগো ফাউন্ডেশনে চলছে হরিলুট।
অনেকেই ভাবতে পারেন, জাগো ফাউন্ডেশন তো সোসাইটি এক্টের অধীনে RJSC-তে রেজিস্টার্ড আছেই। তাহলে সমস্যা কি?
এবার আসুন সমস্যাটা কোন জায়গায় দেখি। বাংলাদেশে জাগো ফাউন্ডেশনের মতো voluntary social welfare agencies চালাতে গেলে THE VOLUNTARY SOCIAL WELFARE AGENCIES (REGISTRATION AND CONTROL)ORDINANCE,1961[http://bdlaws.minlaw.gov.bd/pdf_part.php?id=312] এর অধীনের সকল আইন মেনে কাজ করতে হয়। সেজন্য আমাদের সমাজসেবা অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
যেহেতু জাগো ফাউন্ডেশন একটি voluntary social welfare agencies যারা নারী ও শিশুদের নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আইনানুসারে বর্নীত তফসিল ও সিডিউল অনুযায়ী কাজ করে, কাজেই তাদের অতি অবশ্যই সমাজসেবা অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
উল্লেখ্য যদি কোন voluntary social welfare agencies এই অর্ডিন্যান্সের অধীনে রেজিস্ট্রেশন ব্যতিরেকে কাজ করে তবে তা দন্ডনীয় ‘ফৌজদারী অপরাধ’। করভি রাখসান্দ এই আইন লঙ্গনের দায়ে অপরাধী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেকোনো সময় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে বলেই আমি মনে করি। তাছাড়া জাগো ফাউন্ডেশনে আড়ালে শিশু পাচারের সম্ভাবনা ও থেকে যায়।
এবার আসুন এনজিও ব্যুরোর রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে। যদি কোন non-profit organization বিদেশী কোন অনুদানে কাজ করে তাহলে এনজিও ব্যুরো’র রেজিস্ট্রেশন অত্যাবশ্যক। এখানে সকল রেজিস্টার্ড এনজিও লিস্ট আছে। আপনারা সবাই মিলিয়ে দেখতে পারেন এখানে জাগো ফাউন্ডেশনের নাম আছে কিনা!
http://tinyurl.com/gkqg5wx
আইনগত আরেকটি বিষয় বলা যেতে পারে। জাগো ফাউন্ডেশন এর স্কুল শিক্ষা কার্যক্রম বিষয়ে। বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইনের কোন রেজিস্ট্রেশন না করেই এরা কিভাবে কার্যক্রম চালায় এটাও ভাবার বিষয়। জাগো ফাউন্ডেশন ইংরেজি শিক্ষার নামে কি শিখাচ্ছে সেটাও শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন না।পুরাই যেনো মগেরমুল্লুক।
এছাড়া অনেকেই জাগো ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা করভির ব্যক্তিগত কোন ইনকাম ট্যাক্স এসেসমেন্ট ও জাতীয় রাজস্ব কর্তৃপক্ষের কাছে নেই বলে আমরা জেনেছি। করভি যে গাড়ি চালায়, সেই গাড়ি সে কিভাবে কোথা থেকে কোন অর্থে কিনেছে সেটাও কোথাও উল্লেখ নাই।
শুধু তাই নয়, জাগো ফাউন্ডেশনের ও কোন ইনকাম এসেসমেন্ট জাতীয় রাজস্ব কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয় নাই।
উপরে উল্লেখিত আইনীদিক ছাড়া ও বিভিন্ন সময় জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভির ট্যাক্সবিহীন বিলাসবহুল গাড়ী ব্যবহার এবং এতে জড়িত অন্যদের ড্রাগ এডিকসনের খবরাখবর যাচাই করা উচিৎ।
সার সংক্ষেপঃ
1. No Regi at সমাজসেবা অধিদপ্তর
2. No Regi at এনজিও ব্যুরো
3. No regi at any kind of education authority
4. No record of Income Tax Assessment.
5. No audited accounts since 2008!
এমতাবস্থায়, আমি বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জাগো ফাউন্ডেশনের আইনী বৈধতা যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।
সুশান্তর ব্লগ থেকে
বিবার্তা/ মৌসুমী