বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত ‘সই’ শব্দের মূল একাধিক ভাষা। এ কারণে সই শব্দটি দিয়ে শুধু বান্ধবী বোঝায় না। বাংলা ‘সই’ শব্দটির মূল সংস্কৃত ‘সখী’। শব্দটির বিবর্তন এ রকম: সংস্কৃত সখী > প্রাকৃত > সহী > সই।
এই সই শব্দের অন্য অর্থগুলি হচ্ছে সঙ্গী, সঙ্গিনী, বয়স্যা (তোরা কেনে সখি! বলিস রাধার জয়, তোরা বলগো সই! শ্যামচাঁদের জয়- দাশরথি রায়; শরমে সরমা সই মরিলা- মধুসূদন দত্ত)।
আবার আরবি ‘সহীহ্’ থেকে বাংলায় যে সই শব্দটি এসেছে, তার অর্থ স্বাক্ষর, দস্তখত। আর ‘টিপসই’ অর্থ হাতের বুড়ো আঙ্গুলের মাথার ছাপ।
আরবি সহীহ্ থেকেও বাংলায় সই শব্দটি এসেছে। তবে শব্দটি সরাসরি বাংলায় আসেনি, হিন্দি ভাষার পাসপোর্ট নিয়ে বাংলায় ঢুকেছে। জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস শব্দটির বিবর্তন দেখিয়েছেন এভাবে: আরবি সহীহ্ > হিন্দি সহী > বাংলা সই। আরবি সহীহ্ অর্থ সমান আর বাংলা সই অর্থ উপযোগী, অনুরূপ মত। যেমন মাপসই। আবার এই সই শব্দটি প্রমাণ ও পর্যন্ত অর্থেও ব্যবহৃত হয়। যেমন মাথাসই, হাতসই জল।
সংস্কৃত ‘শায়ী’ থেকেও বাংলায় সই এসেছে। এই সই অর্থ শায়িত, মধ্যগত, মধ্যে নিক্ষিপ্ত (তাকে জল সই করে দিলে)।
সংস্কৃত ‘সহ’ থেকেও বাংলায় সই শব্দটি এসেছে। এ সই ক্রিয়াপদ। এটার অর্থ সহ্য করি (এতো জ্বালা সই কি করে?)।
জিয়াউদ্দিন সাইমুমের ব্লগ থেকে
বিবার্তা/জিয়া