মানুষ সামাজিক প্রাণী। কারও সঙ্গে দু’কথা হয়ে গেলেও পরক্ষণে আবার মিলিত হয়ে যায়। ভালোবাসা ও হৃদ্যতা থাকলে এ মিলন সহজ হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) সহজ একটি পন্থা বলে দিয়েছেন, তোমাদের মধ্যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা তৈরি করতে হলে সালাম বিনিময় করো।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘পূর্ণ মোমিন না হলে তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। পূর্ণ মোমিন হতে হলে একে অপরকে ভালোবাসতে হবে। ভালোবাসা সৃষ্টির সেই পথ কি আমি তোমাদের বলে দেব না? সেই কাজটি করলে তোমাদের মধ্যে হৃদ্যতা ও ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। তোমরা নিজেদের মধ্যে সালামের ব্যাপক প্রচার ঘটাও।’ (সহিহ মুসলিম: ৮১)।
পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেয়া যাবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করল, ইসলামের কোন কাজটি উত্তম? রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করলেন, খানা খাওয়াও এবং সালাম দাও। যাকে চেন তাকেও, যাকে চেননা তাকেও। (সহিহ বোখারি: ১১)।
সালামের শব্দ যত বেশি হবে, আল্লাহ তায়ালা সওয়াবও তত বেশি দেবেন। হজরত ইমরান ইবনে হোসাইন (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে এসে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, সে ১০টি নেকি পেল। এরপর আরেক ব্যক্তি এসে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, সে ২০টি নেকি পেল। কিছুক্ষণ পর আরেকজন এসে বলল, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এ ব্যক্তি ৩০টি নেকি পেল। (তিরমিজি: ২৬১৩)।
সালামের ব্যাপক প্রচার-প্রসার করে আমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচার করো, মানুষকে খানা খাওয়াও এবং রাতে যখন মানুষ ঘুমায়, তখন তোমরা নামাজ আদায় করো। তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।’ (তিরমিজি: ২৪০৯)।
ছোট, সুন্দর ও সহজ এ সুন্নতটি আমরা ঘরে প্রবেশ করার সময় আদায় করতে পারি। কর্মক্ষেত্রে সালাম বিনিময় করতে পারি। বাজারে কেনাবেচার সময় সালাম দিতে পারি। পথেঘাটে চলাফেরা করার সময় এবং যানবাহনে পাশের ছিটে বসা ব্যক্তিকে সালাম দিতে পারি। এছাড়া আরও অনেক ক্ষেত্র আছে, যেখানে আমরা এই সুন্দর ও সহজ সুন্নতটি আদায় করে বিরাট পুরস্কার পেতে পারি।
বিবার্তা/জিয়া