‘শনির দৃষ্টি’ শব্দবন্ধটি মোটেই শ্রুতিসুখকর কিছু নয়। সাধারণত, এর দ্বারা দুর্ভাগ্যের এক বিশেষ পর্বকে বোঝেন হিন্দুরা। অথচ পুরাণ অনুযায়ী শনিদেব কারোর উপরে বিনা কারণে রুষ্ট হন না। আলস্য, কর্মবিমুখতা প্রভৃতি কারণেই শনিদেবের দৃষ্টি পড়ে কারোর উপরে। প্রতিকারের উপায় হিসেবে সেই পুরাণেরই শরণ নেন বিশেষজ্ঞরা। ‘হনুমান চল্লিশা’ পাঠ এবং শ্রীহনুমানের পূজা নিয়মিত করলে শনির প্রকোপ কমে আসে। এই বিশ্বাসের মূলেও কিন্তু রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি।
দেখা যাক ঠিক কী কী কারণে বজরঙ্গবলী প্রতিরোধ করতে পারেন শনির প্রকোপকে।
• শনিদেব এবং হনুমান দু’জনেরই একটা যোগসূত্র রয়েছে। হনুমান শিবের অবতার। আর শনিদেব শিবভক্ত। তিনি শিবের কৃপাতেই তাঁর ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়েছেন।
• ‘সূর্য সংহিতা’ অনুসারে, হনুমান জন্মেছিলেন শনিবারেই। বহু শাস্ত্রেই উল্লিখিত রয়েছে, হনুমানের গাত্রবর্ণ শনিদেবের অনুরূপ।
• শনিদেবের পিতা সূর্যদেব হনুমানের শিক্ষাগুরু। শনিদেবের সঙ্গে পিতা সূর্যদেবের একবার যুদ্ধ পর্যন্ত হয়েছিল। সূর্যদেব হনুমানকে বিপুল ক্ষমতা দান করেন। তিনি শনিদেবকে প্রতিহত করতে পারেন।
• শনিদেবের আচরণ নিষ্ঠুর বলে প্রতিভাত হয়। কিন্তু, হনুমা সেই তুলনায় দয়ালু, প্রেমময়।
• শনিদেবের জন্ম অগ্নি থেকে। আর হনুমান পবনপুত্র। হুতাশনকে স্তিমিত করতে পারে পবনই।
• কথিত রয়েছে, হনুমান শনিদেবকে রাবণের কবল থেকে মুক্ত করেন। সে কারণে শনিদেব হনুমানের প্রতি কৃতজ্ঞ।
• হনুমান ও শনিদেবের আর একটি দ্বন্বের কথাও জানা যায়। একবার শনিদেব হনুমানকে তাঁর প্রভাবগ্রস্ত করার জন্য তাঁর স্কন্ধে আরোহণ করেন। হনুমান তাঁর দেহকে এতটাই বাড়িয়ে নেন যে, শনি বিপর্যস্ত বোধ করেন। শেষে শনিদেবকে হনুমান রেহাই দেন।
• শনিদেব ও হনুমানের মধ্যে একটা একটা আধ্যাত্মিক যোগও রয়েছে। হনুমান আত্মত্যাগের প্রতীক। আর শনিদেবে অহংবোধকে চিহ্নিত করেন। সুতারং অহং থেকে জাত কর্মকে খণ্ডণ করতে পারে একমাত্র বিনয় ও আত্মবিলোপ। সেটা হনুমানের ছাড়া আর কেই বা করতে পারেন! সূত্র: এবেলা।
বিবার্তা/জিয়া