ফিতরা হচ্ছে রোজার জাকাত। জাকাত যেমন মালকে পবিত্র করে ফিতরা তেমনিই রোজাকে পবিত্র করে। রোজার ত্রুটি বিচ্যুতির ক্ষতিপূরণ করে ফিতরা। রোজা কবুলের কারণ হয়।
ঈদের দিন ভোরে যার জীবিকা নির্বাহের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ ব্যতীত সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা ঐ পরিমাণ সম্পদের অধিকারী থাকে, তার উপর ফিতরা ওয়াজিব হবে।
যাকাতের জন্য এই পরিমাণ মাল এক বছর থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ফিতরা ওয়াজিবের জন্য ঈদের দিন ভোরে সময় সম্পদ থাকা শর্ত। নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের অধিকারী না হয়েও যদি কেউ খুশি মনে ফিতরা প্রদান করে তবে সে অধিক সওয়াব লাভ করবে।
কারণ হাদিসে পাকে আছে সচ্ছল না হয়েও যে আল্লাহর পথে ছদকা দেয়, তার দান আল্লাহ অত্যধিক পছন্দ করেন। মহিলাদের শুধু নিজের ফিতরা দেয়া ওয়াজিব। পুরুষের ক্ষেত্রে নিজের ফিতরাও দিতে হবে এবং নিজের নাবালেগ ছেলে-মেয়ের ফিতরা দেয়া ওয়াজিব।
আর বালেগ হলে এবং এক পরিবারভুক্ত হলে তাদের ফিতরা, স্ত্রীর ফিতরা এবং নির্ভরশীল বাপ মায়ের ফিতরা দেয়া মোস্তাহাব। রোজাদার বেরোজাদার সকলের ওপর ফিতরা ওয়াজিব। নাবালেগ সন্তান যদি সম্পদের অধিকারী হয় তবে তার সম্পদ থেকে ফিতরা দিতে হবে।
পিতার কোন বালেগ সন্তান পাগল হলে তার ফিতরা দেয়া পিতার ওপর ওয়াজিব। এতিম সন্তান যদি সম্পদশালী হয়, তবে তাকেও ফিতরা দিতে হবে। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ঋণ বাদে যদি ফিতরা দানের উপযুক্ত হয় তবে ফিতরা দিবে, নতুবা নয়।
ফিতরা কাকে দিতে হবে এবং কাকে দেওয়া যাবে না সে সম্পর্কে জানা থাকা একান্ত প্রয়োজন। ফিতরা দিতে হবে দরিদ্র দুস্থ, আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশিকে এবং আশ-পাশের গরিব দুঃখীদেরকে। ছৈয়দ (নবী পাক (দ.) এর বংশধর), সম্পদশালী এবং সম্পদশালী ব্যক্তির নাবালেগ সন্তানকে ফিতরা দেওয়া যাবে না।
নিজের মা, বাবা, দাদা, দাদী, নানা, নানী কিংবা নিজের ছেলে মেয়ে, নাতি, নাতনি এদেরকে ফিতরা এবং যাকাত দেয়া যাবে না। মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন কিংবা তারাবীহ নামাজের ইমাম দরিদ্র হলে তাদের ফিতরা দেয়া যাবে। কিন্তু বেতন হিসাবে নয়। যাদেরকে জাকাত দেওয়া যায়, তাদেরকে ফিতরাও দেয়া যায়।
বিবার্তা/জিয়া