১. রাসুল(স:) খোলা জায়গায় যেভাবে সালাত পড়তেন: তিনি খোলা জায়গায় সেজদার সামনে সুতরাহ রেখে নামাজ পড়তেন। হযরত ইবনে উমর(রা:) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (স:) ঈদের দিন নামাজ পড়তে বের হলে, আমাদেরকে একটি বর্শা সাথে নেয়ার জন্য নির্দেশ দিতেন। এটা তার নামাজের সেজদার জায়গার সামনে পুঁতে রাখা হতো। তিনি সেই দিকে মুখ করে, নামাজ পড়তেন এবং সাহাবিরা তাঁর পিছনে দাঁড়াতেন। তিনি সফরে থাকলেও এরূপ করতেন। তার পরবর্তী শাসকরাও এটাকে সুতরাহ হিসেবে ব্যবহার করতেন’। বুখারী-৪৬৪,মুসলিম-১০০৭
২. হযরত সালমা ইবনে আকওয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘তিনি মসজিদে নব্বীর স্তম্ভের নিকট নামাজ পড়তেন, যেটি মাসহাফ নামক স্থানের পাশে ছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করা হোল, হে আবু মুসলিম! আপনি এই স্তম্ভের পাশে নামাজ পড়ার চেষ্টা করেন কেন ? কারণ আমি, নবী করিম (স:) কে এর পাশে নামাজ পড়ার জন্য চেষ্টা করতে দেখেছি’। বুখারী-৪৭২,মুসলিম-১০২৮
৩. খালি জায়গায় নামাজ পড়ার সময় সামনে সুতরাহ দিবে: হযরত আবদুর রহমান ইবনে আবু সাঈদ থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তোমাদের কেউ খালি স্থানে নামাজ পড়তে চাইলে, সামনে সুতরাহ রেখে নামাজ পড়ো। নামাজী ও সুতরার মধ্যে দিয়ে কেউ যাবার চেষ্টা করলে, সে যেন তার সাথে লড়াই করে’। ইবনে মাজাহ- ৯৫৪, মুসলিম-১০২০,নাসায়ী -৭৫৮
৪. নামাজীর সামনে দিয়ে না যাওয়া: আবু সাইদ খুদরী থেকে বর্ণিত, ‘তিনি কোন এক জুমার দিনে কিছু একটা সামনে রেখে নামাজ পড়ছিলেন। এমন সময় আবু মু’আয়ীত্ব গোত্রের এক যুবক সামনে দিয়ে দুবার যাবার চেষ্টা করে। তিনি তাকে বাধা দেন ও বিচার মারওয়ানের কাছে যায়। মারওযান জিজ্ঞাসা করেন হে আবু সাঈদ, আপনার ও আপনার ভাইপোর মধ্যে কি হয়েছে !
তখন আবু সাইদ খুদরী বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, ‘আড়াল করে নামাজ পড়া অবস্থায়, সামনে দিয়ে কেউ যেতে চাইলে, তাকে ধাক্কা দিয়ে সরায়ে দাও। তাতে যদি সে না থামে, তাহলে তার সাথে যেন লড়ো। কেননা সে নিশ্চয় শয়তান’। বুখারী- ৪৭৯, মুসলিম – ১০২১
৫. ‘সুতরার’ সামনে দিয়ে কেউ যেতে চাইলে তিনি তাকে হাতের ইশারায় বাধা দিতেন।
তবে কোন কোন সূত্র এই হাদিসকে যঈফ বলেছেন। হযরত উম্মে সালমা (রা:) থেকে বর্ণিত, ‘নবী উম্মে সালমার (রা.) ঘরে নামাজ পড়ছিলেন। আবদুল্লাহ অথবা উমর ইবনে সালামা তার সামনে দিয়ে যেতে উদ্যত হলে হাতের ইশারায় বাধা দিলে তিনি ফিরে যান’। ইবনে মাজাহ- ৯৪৮
৬. হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ খোলা জায়গায় নামাজ পড়ে, সে যেন সুতরাহ হিসাবে সামনে কিছু রাখে। যদি কিছু না পায়, তাহলে সে যেন একটা লাঠি রাখে। সেটাও না পেলে, তার সামনে যেন একটা রেখা টেনে দেয়। তারপর এই রেখার বাহির দিয়ে কেউ যাতায়াত করলে, তার কোন ক্ষতি হবে না’। ইবনে মাজাহ- ৯৪৩, আবু দাইদ-৬৮৯
৭. হযরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (স.) সফরে উনার উটকে সামনে আড়াআড়ি করে বসিয়ে, তার দিকে মুখ করে নামাজ পড়তেন’। বুখারী-৪৭৭, মুসলিম-১০১০
৮. হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) নামাজ পড়ার সময়, আমি তার ও কেবলার মাঝামাঝি জায়গায় লাশের মত আড়াআড়িভাবে শুয়ে থাকতাম’। বুখারী-৪৮৫, মুসলিম-১০৩১,ইবনে মাজাহ-৯৫৬
৯. হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমি রাসুলুল্লাহর (স.) সামনে শুয়ে থাকতাম। আমার পা দুটি কেবলার দিকে থাকত। রাতের নামাজ পড়ার সময়, তিনি যখন সেজদা করতেন, তখন হাত দিয়ে আমাকে টিপ দিতেন। আমি পা গুটিয়ে নিতাম। আবার তিনি যখন দাঁড়িয়ে যেতেন, আমিও পা বিছিয়ে দিতাম।এ সময় ঘরে কিন্তু আলো থাকত না’। বুখারী- ৪৮৩ ,মুসলিম- ১০৩৬
বিবার্তা/জিয়া