সচরাচর মৃত ব্যক্তির কবরের উপরে বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগাতে দেখা যায়। বিভিন্ন বিশ্বাস থেকেই এই চিরাচরিত প্রথা চলে আসছে। তবে এই বিশ্বাস অথবা নিয়ম নিয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর কথাও প্রচলিত আছে। আমাদের সবারই উচিৎ ব্যক্তিজীবনে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তি এড়িয়ে ইসলামের সঠিক নির্দেশনা জানা।
বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ কবরে গাছ লাগানো সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিকোণ ব্যাখ্যা করেছেন।
সম্প্রতি এনটিভির একটি অনুষ্ঠানে একজন দর্শক প্রশ্ন করেছিলেন, ‘অনেকেই বলেন কবরের ওপর কোনো গাছ থাকলে ওই গাছের পাতা যে জিকির করে তার সওয়াব নাকি কবরবাসী পেয়ে থাকে। তাহলে কবরের ওপর ছোট-বড় কোনো গাছ লাগানো যাবে কি?’
উত্তরে আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, কবরের ওপর গাছ লাগানো জায়েজ। কিন্তু আপনি যেটা আগে শুনেছেন, সেটা শুদ্ধ নয়। এটি শোনা কথা। হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি। যদি কবরের ওপর গাছ থাকে, সেই গাছ জিকির করে আর এই জিকিরের কারণে জিকিরের সওয়াবগুলো কবরবাসী যাঁরা আছেন, তাঁরা পেয়ে যান, এই ধরনের বক্তব্য শুদ্ধ নয়। তবে কবরের ওপর গাছ লাগানো নাজায়েজ নয়, জায়েজ।
একই অনুষ্ঠানে আরও একতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিলো, ‘একটি বইতে পড়েছি কবর জিয়ারত করলে নাকি কবরবাসী জানতে পারে যে কে তার কবরের কাছে এসে তার জন্য দোয়া করছে এবং তার পরিবারের লোকজন দেখলে খুশি হয়। এটি কতটুকু সত্য?’
উত্তরে তিনি বলেন, না, এটি সত্য নয়। কবরের বিধিবিধান হচ্ছে, কবরবাসী কিছুই জানতে পারে না। বাজরাখি জিন্দেগির (দুনিয়া ও আখিরাতের মধ্যবর্তী জীবন) সঙ্গে মূলত দুনিয়ার জীবনের পার্থক্য হচ্ছে এখানেই যে, দুনিয়ার জীবন থেকে কেউ যখন বাজরাখি জিন্দেগিতে চলে যাবে, তখন বাজরাখি জিন্দেগি থেকে তিনি দুনিয়ার কোনো খবর কোনো কিছুই দিতেও পারবেন না, নিতেও পারবেন না।
তাই আজ পর্যন্ত কোনো কবরবাসী কোনো খবর দিতে পারেননি। আর কোনো কবরস্থ ব্যক্তির কাছে কোনো খবরও পৌঁছাতে পারেনি। তাদের জন্য শুধুমাত্র আমরা যেটা করতে পারি সেটা হচ্ছে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করতে পারি।
বিবার্তা/জিয়া