রামায়ণ-মহাভারত তো ছোটবেলা থেকে সবাই পড়েন। কিন্তু মূল চরিত্রগুলি এবং মূল ঘটনাগুলি বাদ দিয়ে বাকি অনেকটাই কিন্তু থেকে যায় অজানা। জেনে নিন এই মহাকাব্যটি সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
১. রাজা দশরথ ও রানি কৌশল্যার ছিল এক কন্যা সন্তান। নাম শান্তা। তিনি রাম-লক্ষ্ণণ-ভরত-শত্রুঘ্নের চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন। কৌশল্যার বোন তাঁকে দত্তক নেন।
২. হনুমানের লঙ্কাকাণ্ড আসলে ছিল একটি অভিশাপ যা বহুদিন আগে রাবণকে দিয়েছিলেন শিবের সেবক নন্দী।
৩. চৌদ্দ বছরের বনবাসে লক্ষ্ণণ একদিনও ঘুমোননি। বনবাসে যাওয়ার আগে তিনি নিদ্রাদেবীর কাছে বর চেয়েছিলেন যাতে এই ১৪ বছরে তাঁর ঘুম না আসে। নিদ্রাদেবী বর মঞ্জুর করেন কিন্তু এর পরিবর্তে লক্ষ্ণণের স্ত্রী উর্মিলাকে ১৪ বছর ঘুমোতে হয়।
৪. বলা হয় রামায়ণের লক্ষ্ণণই হলেন মহাভারতের বলরাম। রামায়ণে ছোট ভাই হিসেবে সারাজীবনই তাঁকে আদেশ পালন করে যেতে হয়। তাই পরবর্তী দ্বাপর যুগে বিষ্ণু অবতার কৃষ্ণের বড় ভাই হিসেবে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং তাঁর অগ্রজ হওয়ার ইচ্ছেপূরণ হয়।
৫. রামের আগেই মারা গিয়েছিলেন লক্ষ্ণণ। যমরাজকে দেওয়া রামের একটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই তিনি নিজে সরযূ নদীর তীরে গিয়ে প্রাণত্যাগ করেন।
৬. হনুমান যখন জানতে পারেন যে রামের দীর্ঘায়ু কামনায় সীতা সিঁথিতে সিঁদুর পরেন তখন তিনি সারা গায়ে ‘কুমকুম’ বা সিঁদুর মেখে ফেলেন। মেটে সিঁদুরের রঙে তাঁর গায়ের রং হয়ে ওঠে কমলা। এজন্যই হনুমানের আর এক নাম বজরংবলী কারণ বজরং কথার অর্থ কমলালেবু।
৭. নারদ মুনির প্ররোচনায় একবার ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করে হনুমানকে বধ করতে গিয়েছিলেন রাম। তখনই হনুমান একমনে রামনাম জপ করতে থাকেন। আর সেই নামজপেই অকেজো হয়ে যায় সবচেয়ে শক্তিশালী এই দৈব অস্ত্র।
৮. রামায়ণের বালি-ই মহাভারতের জরা নামক ব্যাধ যিনি দ্বাপর যুগে কৃষ্ণের হত্যার কারণ হয়েছিলেন।
৯. বাল্মীকি ছাড়া অন্যান্য বহু রামায়ণের মতে, শূর্পনখা বিবাহিত ছিলেন এবং রাম যেহেতু তাঁর স্বামী ‘দুষ্টবুদ্ধি রাক্ষস’-কে হত্যা করেন তাই তিনি প্রতিশোধ নিতে রাবণকে সীতাহরণের প্ররোচনা দেন।
১০. রাম-রাবণের শেষ যুদ্ধে রামের জয়ের পিছনে বালিপুত্র অঙ্গদের বিরাট অবদান ছিল। রাবণ যুদ্ধে যাওয়ার আগে যজ্ঞ করছিলেন। যজ্ঞ নষ্ট করার জন্য সেখানে উপস্থিত হয় অঙ্গদ এবং বানরসেনার কয়েকজন কিন্তু কিছুতেই রাবণের মনোযোগ নষ্ট করা যাচ্ছিল না। শেষে অঙ্গদ রানি মন্দোদরীর বিনুনি ধরে টানাটানি শুরু করে। তাও রাবণ অটল ছিলেন। কিন্তু মন্দোদরী রাবণকে ব্যঙ্গ করে বলেন যে রাম তাঁর স্ত্রীর জন্য এত কিছু করছেন আর রাবণ তাঁর স্ত্রীকে এই বানরকুলের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেন না। এই কথা শোনার পরেই রাবণ যজ্ঞভঙ্গ করে অঙ্গদ ও দলবলকে তাড়ান এবং বলাবাহুল্য এর পরেই তিনি যুদ্ধে পরাজিত হন।
বিবার্তা/জিয়া