রাজীব মীর
মূলত স্বায়ত্তশাসন হচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে পাবলিক বা সর্বজন বিশ্ববিদ্যালয় ছিল চারটা। দুটি ছিল বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। দেশে এখন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১২০। যার মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৮টি। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের পে-কমিশন সুপারিশ ও মন্ত্রিসভায় জাতীয় বেতন স্কেল অনুমোদনের পর সর্বজন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন স্কেল বৈষম্য মর্যাদাহানিকর হওয়ায় তারা ক্লাস পরীক্ষা বর্জন শুরু করে আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত অর্থ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামে। আন্দোলন চলছে।
পেশা হিসেবে শিক্ষকতা সব সময়ই মর্যাদার, সম্মানের। কিন্তু বেতন স্কেলে শিক্ষকদের সে সম্মানে আঘাত হানা হয়েছে। বহুদিন থেকেই শিক্ষকরা স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো দাবি করে আসছিলেন। স্বতন্ত্র কাঠামোর সুপারিশই করেছে বটে ফরাসউদ্দিন কমিশন! সপ্তম বেতন কাঠামো পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষকদের বেতন কাঠামোতে বৈষম্য ছিল না। 'সিলেকশন গ্রেড' পাওয়া অধ্যাপকরা সরকারের সর্বোচ্চ বেতন কাঠামোর অধিকারী হয়ে সচিব পদমর্যাদায় বেতন-ভাতা পেতেন। দুই বছর আগে 'সিনিয়র সচিব' পদ চালু করা হলে শিক্ষকরা এক ধাপ পিছিয়ে পড়েন। প্রস্তাবিত জাতীয় বেতন কাঠামো নিয়ে সচিব কমিটির সুপারিশে সচিবের ওপরে 'মুখ্য সচিব/মন্ত্রিপরিষদ সচিব' ও 'সিনিয়র সচিব' নামে পৃথক দুটি স্কেলের সুপারিশের মাধ্যমে শিক্ষকরা দুই ধাপ পিছিয়ে পড়েছেন। সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা জাতীয় বেতন স্কেলে দুই ধাপ পিছিয়ে পড়লে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রভাষকরাও পিছিয়ে পড়বেন। যদিও সিলেকশন গ্রেডকেই বাতিল করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া মূল বেতন কাঠামোতে সপ্তম বেতন কাঠামোর এক ধাপ নিচে বেতন বিন্যাসের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে তিন ধাপ অবনমন সত্যিই বিস্ময়কর। প্রজাতন্ত্রের বেতন কাঠামো যেহেতু পদমর্যাদার স্মারক, তাই বেতন কাঠামোর এই অবনমনমূলক অনুমোদন শিক্ষকদের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। বেতন ও পদমর্যাদা কমে যাবে দেশের ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষকের। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দলমত নির্বিশেষে এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছেন, সরকারকে শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন স্কেল ঘোষণা করতে দাবি জানিয়েছেন।
কিন্তু সরকারের অর্থমন্ত্রী এ আন্দোলনকে নাকচ করে দিয়ে বিভ্রান্তিকর ও অপমানসূচক কথা বলায় শিক্ষকরা ফুঁসে উঠেছেন, যদিও পরবর্তীতে তিনি তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু তিনি যেসব যুক্তিতে শিক্ষকদের বেতন অবনমনের সাফাই গেয়েছেন তা খুবই আপত্তিকর এবং অবমাননাকর। তার মতে, শিক্ষকরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অল্প সময়ে অধ্যাপক হয়ে যান, প্রভাষকের চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যাপকের সংখ্যা বেশি ইত্যাদি। কিন্তু এসব কথা বলার মাধ্যমে তিনি শিক্ষকদের আত্দাভিমানে আঘাত করেন, আমলাসুলভ আচরণ করেন, যেটি মোটেও কাম্য নয়। যদিও শিক্ষকতা পেশা আর পাঁচটা পেশার মতো শুধু চাকরি নয়, আরও বেশি কিছু্। সবচেয়ে মেধাবী ও যোগ্য শিক্ষার্থী এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকে অবলীলায় পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। বেতনের কথা ভাবেন না। সুযোগের কথা, সুবিধার কথা চিন্তা না করে সৃজনী পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করেন। তাই অন্য কোনো পেশার সঙ্গে এ পেশার তুলনা চলে না। স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবি তার ন্যায্য। কিন্তু সব পেশারই প্রমোশন আছে, প্রমোশনের একটা শেষ অবস্থানও আছে। কিন্তু আমলাদের শেষ অবস্থানের উচ্চতা আর শিক্ষকদের অবস্থান অমিল হলে, গরমিল হলে যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, নানা তুলনা চলে আসে।
সব রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পরও শিক্ষকতা এখনো মেধাবী ও প্রতিভাধরদের দখলে এ কথা অনস্বীকার্য। কিন্তু আমলারা রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন একচেটিয়া। আমলাতন্ত্র শিক্ষকদের পদে পদে বঞ্চিত করেছে, করে চলেছে। অনেক রকমের বঞ্চনার মধ্যে আমি এখানে দুয়েকটি উল্লেখ করছি। ক্যাডারভুক্ত সরকারি কর্মকর্তারা অফিসিয়াল (নীল) পাসপোর্ট পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ সুবিধা পান না। অফিসিয়াল পাসপোর্টের অধিকারী ব্যক্তির সার্কভুক্ত দেশসহ ৩২টি দেশে যাওয়ার জন্য কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হলো দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন মিটিং, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করা, সে জ্ঞান শ্রেণিকক্ষে বিতরণ করা। কিন্তু পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জাতীয় এ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল দায়িত্ব পালনের জন্য উচ্চতর ডিগ্রির প্রয়োজন না থাকলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে তাদের জন্য উচ্চশিক্ষা খাতে বিরাট অঙ্কের টাকা বরাদ্দ থাকে। কোনো কর্মকর্তা বিদেশে এডমিশন নিতে পারলে সে ফান্ড থেকে অর্থায়ন করা হয়। তাছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আসা উচ্চশিক্ষার সব স্কলারশিপ আমলারা ভোগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। প্রটোকলসহ রাষ্ট্রীয় অন্যান্য সুবিধা তো রয়েছেই।
২০১২ সালের ১৭ মে তারিখের দৈনিক জনকণ্ঠের সূত্রমতে, ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা চাকরিতে যোগদানের তিন বছর পর একটি ফ্ল্যাট ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি পর্যায়ে তিনি সুবিধামতো স্থানে একটি ফ্ল্যাট বুকিং দিতে পারবেন। ঋণ হিসাবে সরকার তার এই ফ্ল্যাটের সমুদয় টাকা পরিশোধ করবে। সরকারি এই ঋণের টাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার চাকরি জীবনে নির্ধারিত বাড়িভাড়ার টাকা থেকে মাসিক হারে কেটে নেওয়া হবে। একই সঙ্গে গাড়ি ক্রয়ের ঋণ উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরও দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। বর্তমানে যুগ্ম-সচিব ও ততোর্ধ্ব কর্মকর্তারা এই ঋণের সুবিধা পেয়ে থাকেন। একজন কর্মকর্তা গাড়ি ক্রয়ের জন্য ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত সরকারি কোষাগার থেকে ঋণ নিতে পারেন। এর পাশাপাশি ওই গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ও গাড়ি চালকের খরচ বাবদ প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা করে পান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসব সুবিধার কথা চিন্তাই করতে পারেন না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা কেন এ সুবিধাগুলো পান আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেন এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন তার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা কারও কাছে নেই। ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোনো প্রতিযোগিতা থাকা উচিত নয়। বাজারমূল্যের সঙ্গে সব সরকারি চাকরিজীবীর বেতনই অসংগতিপূর্ণ। কিন্তু আপত্তিটা তখনই আসে যখন এ কর্মকর্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ অন্য সবাইকে বঞ্চিত করে শুধু নিজেদের জন্য এসব সুযোগের ক্ষেত্র তৈরি করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদা নিয়ে টিকে থাকতে হলে এ অসমতাগুলোরও অবসান হওয়া জরুরি।
কিন্তু রাষ্ট্র বিষয়গুলো এড়িয়ে যায়। দোষ দেয় শিক্ষক রাজনীতির। মজার বিষয় হলো রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে এখানে ক্ষমতার অভয়ারণ্য তৈরি করতে শিক্ষকদের মধ্যে অনুগামী অনুসারী তৈরি করে, নিজেদের আস্থাভাজনদের মধ্য থেকে যে যার ক্ষমতাকালে উপাচার্য নিয়োগ দেন। সে অনুযায়ী নিজেদের দল করেন এমন লোকদের শিক্ষক নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করেন। নিজেদের আজ্ঞাবহ ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠা করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রভাব বিস্তারকল্পে শিক্ষকদের নানাভাবে অসম্মানিতও করেন। সে অনুযায়ী পদোন্নতিসহ অন্য নানা সুবিধাদি বিষয়ে রাজনৈতিক প্রভাববলয়ের শিক্ষক নেতারা কর্তৃক যে ক্ষমতার অপব্যবহার হয় না, এ কথা বলা যায় না। যদিও রাষ্ট্রের অন্যান্য সেক্টরে দুর্নীতির মহাসাগরের তুলনায় এটি ছোট একটা পুকুর বটে এবং সেটা হওয়ার দায়ও কোনো কারণেই সব শিক্ষকের তো নয়ই বরং পুরো দায় রাষ্ট্রের অপরাজনীতির। কিন্তু আমরা জানি ফাইল আটকে বছরের পর বছর জনমানুষের দুর্ভোগ যারা দেন তারা কারা? কারা কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেন, একই ব্যক্তি কয়টা করে দামি গাড়ি চড়েন। দেশে ও দেশের বাইরে প্রাসাদ গড়েন, বিলাস ব্যসনে মত্ত থাকেন। সে তর্কে যাব না, কিন্তু দরকার হলে খতিয়ান বের হবে, সেটিও মিথ্যা নয়। আজকে যিনি সচিব, তিনি কোনো একটা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী। হয়তো সবার ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমান নয়। কিন্তু এতে নিজেদের ইনফিরিয়র ভাবার কিছু নেই। নিজেরাই অর্গানোগ্রাম ভেঙে এই যে পদের নানা বিন্যাস করা হচ্ছে এটা মানসিক উচ্চতাকে প্রমাণ করে না। আমরা এখনো বলছি না যে আমরা কারও শত্রু বা কারও বেতন বা মর্যাদা কমুক কিন্তু আমাদের নিয়ে অযথা টানাহেঁচড়া করতে যাবেন না। হিতেবিপরীত হবে।
বিশ্বব্যাংকের ফর্মুলা মেনে শিক্ষা ব্যয় সংকোচন শিক্ষাকে সর্বজনের স্বার্থে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হবে। সর্বজনের স্বার্থ রক্ষা করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির অবাস্তব চিন্তাও পরিহার করতে হবে। আর না হলে পাবলিক তো বটেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও কি অবস্থা হবে, সহজেই অনুমেয়। আপাত আন্দোলন সামাল দিয়ে এনবিআরের ঘোষণা কতটা প্রহসনমূলক হতে পারে বলছি। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা কিন্তু অনেক দিন থেকেই ভ্যাট গুনছে। প্রতিষ্ঠান দিচ্ছে না। এখন সরকারের ঘোষণা মতে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি নিজেরা ভ্যাট দেয়, ইংলিশ মিডিয়ামগুলোও কি তাই করবে? প্রশ্ন হলো, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভ্যাট দেবে কোথা থেকে? হাস্যকর এ জন্য যে তাদের তো আয়ের উৎস সেই শিক্ষার্থীরাই, তাহলে!
শিক্ষা কোনো বিলাস দ্রব্য নয় যে শুধু যাদের বাবার পকেটে টাকা আছে তারাই শিক্ষিত হবে, বিশ্ববিদ্যালয় হবে গণমানুষের। কিন্তু ক্রমাগত বাণিজ্যিকীকরণের ফলে শিক্ষা পণ্যে পরিণত হয়েছে। পাবলিকে তো নাইট শিফ্ট, শিক্ষার্থী বেতন ফি বৃদ্ধি ইত্যাদি বাণিজ্যিকীকরণ চলছেই। এভাবে তো শিক্ষারই বেহাল দশা হতে যাচ্ছে, মেরুদণ্ডে সৃষ্টি হচ্ছে ঘা।
১৯২২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বরাদ্দ কমানোর বিরুদ্ধে তখনকার উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জি বলেন, the University will not be manufactory of slaves. we want to think truly. we want to reach freedom... Freedom first, freedom second. freedom always... বর্তমানে বাজারের চাহিদা পূরণই শিক্ষার একমাত্র উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভ্যাট বসিয়ে শিক্ষা এখন পুরোদস্তুর পণ্য। অধ্যাপক যতীন সরকারের মতে, 'আজকে আর শিক্ষার্থী কেউ নেই, সবাই পরীক্ষার্থী।' শিক্ষার্থীরা টাকা দিয়ে যা কিনে তা পরীক্ষার নম্বর, শিক্ষা নয়। এখন নোটবইয়ের নাম হয় উচ্চ নম্বরের সিঁড়ি। শিক্ষা বাণিজ্যে শিক্ষাব্যয় তো বাড়ছেই, মৌলিক জ্ঞানকেও দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যদিও সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য, দেশপ্রেম শেখানোর জন্য, সেবার মনোভাব তৈরির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া উচিত। শিক্ষকদের মানমর্যাদার সুরক্ষা না করে, শিক্ষার্থীর আর্থিক সুবিধা বিবেচনা না করে এমন প্রাণহীন বাজারি উচ্চশিক্ষা আর যাই হোক, স্বাধীন চিন্তার দক্ষ মানুষ গড়বে, গণমানুষের কল্যাণ করবে- এমনটি ভাবা রাষ্ট্রের অদূরদর্শিতা ও অবিমৃষ্যকারিতাই বটে।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।