সেতুর স্বপ্ন, স্বপ্নের সেতু

সেতুর স্বপ্ন, স্বপ্নের সেতু
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০১৬, ১৬:৫৫:১৭
সেতুর স্বপ্ন, স্বপ্নের সেতু
প্রিন্ট অ-অ+
দেশি-বিদেশি নানা পক্ষের কত বদনাম, কত অভিযোগের দূর্গম গিরি, দুস্তর মরু পেরিয়ে আমরা একটি স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখতে যাচ্ছি! 
 
আমাদের সেই স্বপ্নের নাম পদ্মা সেতু। প্রমত্তা পদ্মার ওপর দিয়ে নৌকা চলে, লঞ্চ-স্টিমার-জাহাজ চলে। চলে ফেরিও। সেসবের সাহায্যে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন পদ্মা পাড়ি দিয়ে রাজধানীতে আসে আর ফিরে যায়। কিংবা চলে যায় আরো দূরের কোনো জেলায়। 
 
আসা-যাওয়ার এই নিত্যচিত্রে কোনো অসঙ্গতি নেই। অসঙ্গতি শুধু একটাই : বিপুল সময় ব্যয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রাগ্রসরতার এই যুগে এশিয়ার প্রতিবেশী চীন যখন ঘন্টায় সাড়ে চার শ’ কিলোমিটার গতির ট্রেন চালু করতে যাচ্ছে, তখন আমরা এক-দুই ঘন্টার পথ ১০ ঘন্টায় পাড়ি দেয়ার জন্য জীর্ণ-পুরাতন বাস কিংবা আদ্যিকালের ফেরিতে বসে ঝিমাবো, এ সত্যিই হাস্যকর ও অবাস্তব। 
 
বাস্তব হলো, নৌপথ থাকবে। সেই পথে নৌযানও চলবে। কিন্তু পাশাপাশি চাই একটি সেতুও। তা যতই ব্যয়সাধ্য হোক,  চাইই চাই। 
 
আমাদের সেই চাওয়া আজ পূরণ হতে চলেছে। তবে এই চাওয়া-পাওয়ার পথটি কুসুমাস্তীর্ণ তো ছিলই না, বরং ছিল কণ্টকাকীর্ণ। আমরা ভুলে যাইনি, পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগ ও প্রাকযোগ্যতা যাচাই ইত্যাদি প্রাথমিক প্রস্তুতিপর্বেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এ প্রকল্পে অর্থায়ন স্থগিত করেছিল বিশ্বব্যাংক। তখন দেশে ‘হায়, হায়’ ধুয়া উঠেছিল। তীব্র হতাশা ও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল, পদ্মা সেতু বুঝি আর হলো না।
 
আমরা মনে করতে চাই, সেদিন হতাশ ও হতোদ্যম হননি শুধু একজন। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মেরুদণ্ড সোজা করে অবস্থান নিয়েছিলেন, পদ্মা সেতু হবেই, হতেই হবে। বিদেশি অর্থায়ন না-হলে দেশি অর্থে হবে।
 
সেদিন তার এ অবস্থানও অনেক সংশযের জন্ম দিয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, এও কি সম্ভব ? 
 
সঙ্গত প্রশ্ন, আমরা উন্নয়নশীল দেশ। সাধ্যের অভাবে আমাদের অনেক সাধই অপূর্ণ থেকে যায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন, ইচ্ছা থাকলে অসম্ভবও সম্ভব হতে পারে। আজ আমরা তা-ই দেখছি। দেখছি, চীনের কারখানায় তৈরি সেতুর সুপার স্ট্রাকচারের প্রথম চালানটি ইতিমধ্যেই প্রকল্প এলাকায়  পৌঁছেছে। পদ্মার তীরে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে পাইল। ট্রাস ফেব্রিকেশন ইয়ার্ডে সেতুর ওপরের কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। 
 
মোটের ওপর, পদ্মা সেতু নির্মাণের মহাযজ্ঞ থেমে নেই। আমার জেনেছি, প্রকল্পের কাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ২৮ শতাংশ। আরো জেনেছি, সেতুটি হবে দোতলা, এতে থাকবে চার লেন। আশা করা হচ্ছে, ২০১৮ সাল শেষ হওয়ার আগেই চালু হবে পদ্মা সেতু। আমাদের স্বপ্ন এসে ধরা দেবে জ্বলজ্যান্ত হাতের মুঠোয়। 
 
আমরা সেই শুভদিনের অপেক্ষায় থাকলাম। 
 
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com