উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) ফল প্রকাশ হয়েছে। পাসের হার ও জিপিএ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা – দু’টোই আগের বছরের চাইতে বেড়েছে।
এ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দেশের কয়েক লাখ তরুণ শিক্ষার্থী তাদের জীবন চলার পথে একটি বড় ধাপ অতিক্রম করলো। এবার তারা প্রবেশ করবে শিক্ষার বৃহত্তর অঙ্গণে। এই শুভক্ষণে তাদের সকলকে জানাই উষ্ণ আন্তরিক অভিনন্দন। তাদের উদ্দেশে কায়মনোবাক্যে বলি : নতুন পথের অভিযাত্রী দল, তোমাদের যাত্রা হলো শুরু। এ যাত্রা শুভ হোক।
এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর মধ্যে এমন অনেকে আছে, থাকে প্রতিবারই, যারা না-খেয়ে, আধপেটা খেয়ে, রিক্সা চালিয়ে কিংবা দিনমজুরি করে লেখাপড়া করে ভালো ফল করেছে। তারা তাদের মেধা ও সংকল্প দিয়ে অসাধ্য সাধন করেছে। তাদের এই কঠিন পথচলায় সহযোগিতা দিয়েছে তাদের অভিভাবক, শিক্ষক ও সহপাঠীরা। ওই দূর্গম পথের যাত্রী এবং তাদের সহযোগীদেরও জানাই অভিনন্দন।
আমাদের দেশ আয়তনে ছোট, অর্থনৈতিক সামর্থেও এমন আহামরি কিছু এখনো হতে পারিনি। তবে এটাও সত্য, নানা প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েও বাংলাদেশ যেভাবে দৃপ্তপদে এগিয়ে চলছে, তাতে নিকট ভবিষ্যতে এদেশকে যদি সমগ্র বিশ্ব উন্নয়নের মডেলরূপে গ্রহণ করে, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
উন্নয়নের এই জোয়ারকে এগিয়ে নিতে আমাদের দরকার বিপুল শিক্ষিত ও কর্মদক্ষ তরুণ কর্মীদল। আজ যারা জীবনের শেষ পাবলিক পরীক্ষাটিতে পাস করে বৃহত্তর ক্যাম্পাসের দিকে এক কদম এগিয়ে গেল, তাদের কাছে দেশ ও মানুষের অনেক চাওয়া। সেই চাওয়া পূরণের যোগ্য করে নিজেকে গড়ে তুলতে হলে লেখাপড়ার বিকল্প নেই। আমাদের অরুণ প্রাতের তরুণ দল এই সত্যটি উপলব্ধি করবে - এটাই আন্তরিক কামনা।
তাই তাদেরকে মনে করিয়ে দিতে চাই, এই স্বাধীন দেশটির মাটি মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদের রক্তে ভেজা। এই দেশটির বাতাসে কান পাতলে এখনো শোনা যায় নির্যাতিত নারী-পুরুষের হাহাকার। লাখো মানুষের জীবনের দামে কেনা এই দেশ, এর স্বাধীনতা, পৃথক পতাকা।
এই পতাকাকে সমুন্নত রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে একে বয়ে নিয়ে যেতে হবে। তবেই শান্তি পাবে আমাদের শহীদ পূর্বপুরুষদের বিদেহী আত্মা।
একটি জ্ঞানভিত্তিক গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আমাদের যে পথ চলা, তাতে যুক্ত হলো আরো কয়েক লাখ তরুণ তাজা প্রাণ। অরুণ প্রাতের এই তরুণ দলকে আবারো অভিনন্দন ও শুভকামনা : এগিয়ে যাও উদয়ের পথে। ভয় নাই ওরে ভয় নাই।