ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে সম্প্রীতি। ঈদ মানে ভ্রাতৃত্বের অটুট বন্ধন। ঈদের আগমনে অনুগত মুসলিম মুছে ফেলে পাপ-পঙ্কিলতার কালিমা। নিভিয়ে দেয় হিংসাবিদ্বেষ, কাম-লোভ, আর রাগ-ক্ষোভের আগুন। কি আমির-ফকির, কি শ্রমিক-মালিক, কি উঁচু-নীচু প্রত্যেকে আপন আপন ভেদাভেদ ভুলে হাতে হাত, বুকে বুক মেলায়। শান্তি, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব আর সাম্যের গান গায়। ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত মুমিন-মুসলিম দয়াল মাওলার গুণকীর্তন করে।
বছর ঘুরে সেই মহিমান্বিত ঈদ আমাদের সামনে। আজ ভাবতে হবে আমরা কি মনের পাপ-পঙ্কিলতা মুছে ফেলতে পেরেছি? আমরা কি হিংসা-বিদ্বেষ, কাম-লোভ আর ক্রোধ ঝেড়ে ফেলতে পেরেছি? পেরেছি কি আমরা মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ভাগ করে নিতে? অথচ কোরবানি আমাদেরকে মনের পশুত্ব ত্যাগের আহবান জানায়।
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর পথে নিজের জানমাল ও প্রিয়তম জিনিস সন্তুষ্টচিত্তে বিলিয়ে দেয়ার এক সুমহান শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর ঈদ-উল-আজহা আমাদের মাঝে ফিরে আসে। ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী কোরবানি ওয়াজিব। আল কুরআনের সূরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘অতএব তোমার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড় এবং কোরবানি কর।’ আর সূরা হজ্বে বলা হয়েছে, ‘কোরবানির পশু মানুষের জন্য কল্যাণের।’
হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর অনুপম ত্যাগের অনুসরণে হাজার হাজার বছর ধরে বিশ্ব মুসলমানরা কোরবানি করে আসছে। তাঁরই নিদর্শনস্বরূপ প্রতি বছর হজ্ব পালনকারীরা কোরবানি দেন।
তবে শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, কোরবানির পূর্বশর্ত আল্লাহ ভীতি ও একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আকাঙ্ক্ষা। হাদীস শরীফে আছে, ‘মানুষের আমলের প্রতিফল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ সূরা হজ্বে বলা হয়েছে, ‘এগুলোর গোশত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে যায়।’
ঈদ-উল-আজহা হোক শাশ্বত ও চির কল্যাণের, মানবতার সুখশান্তি, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার মহান বারতা। ঈদের মিলনমেলায় উচ্চারিত হোক বাংলার মাটি থেকে সন্ত্রাস ও অশুভ জঙ্গিবাদ নির্মূলের প্রত্যয়দীপ্ত শপথ।
আমরা চাই প্রশান্ত, উচ্ছ্বল ও উৎসবের বাতাবরণে ঈদ আনন্দের উর্মিলা শিহরণ জাগুক প্রতি মানবের অন্তরে। ঐকান্তিক কামনায় ঈদ আসুক বারেবার। ঈদ-উল-আজহা হোক শাশ্বত ও চিরকল্যাণের, মানবতার সুখশান্তি, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার গতিশীল ইশারা।
বিবার্তার সম্মানিত পাঠক, উপদেষ্টা, প্রতিনিধি, শুভাকাঙ্ক্ষী, বিজ্ঞাপনদাতা ও দেশবাসীকে জানাই ঈদ মোবারক।