আমাদের দেশে অনুপার্জিত আয় অর্থাৎ হারাম টাকার রমরমা ব্যবসা বহুদিন ধরে সগৌরবে বিরাজমান। অফিস-আদালতে গেলে ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না। রাস্তায় চলতে গেলে পিতৃপরিচয়হীন বেজন্মার দল পথরোধ করে সবকিছু, এমনকী কখনো কখনো জীবন পর্যন্ত, ছিনিয়ে নেয়। বা্সা বা অফিসে থাকলেও স্বস্তি নেই। আসবে টেলিফোন। চাওয়া হবে মোটা অংকের ‘চাঁদা’।
এভাবে্ই চলে আসছে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বড় একটা ধরতে পারে বা পেরেছে, এমন ‘দুর্নাম’ চরম শত্রুও দিতে পারবে না। ফলে চাঁদাবাজির হারাম ব্যবসা ভালোই চলে। চাঁদাবাজরাও চলে বুক ফুলিয়ে। আর সৎ ও শান্তিপ্রিয় মানুষ থাকেন ভয়ে-ভয়ে।
কিন্তু দুঃসাহসেরও তো একটা সীমা থাকা চাই। ইদানীং বোধহয় সেই সীমাও ছাড়িয়ে গেছে বেজন্মা চাঁদাবাজের দল। নইলে কি করে তারা একজন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে?
খবরে জানা গেছে, গত রবিবার দুপুরে চরমপন্থী সর্বহারা পার্টির নেতা পরিচয়দাতা এক ব্যক্তি ফোন করে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনূসের কাছে। দাবি করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা। হুমকি দেয়, চাঁদা না দিলে তার (ডিসি) ছেলেমেয়েদের হত্যা করা হবে।
খবরটি আমাদের স্তম্ভিত করেছে। চাঁদাবাজ নামধারী ঘৃণ্য কীটদের স্পর্ধা আজ কোন পর্যায়ে পৌঁছাছে যে, তারা একজন জেলা প্রশাসকের কাছে পর্যন্ত চাঁদা চায় এবং হুমকি দেয়।
খবরে বলা হয়, বিষয়টি ওইদিনই সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। তবে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা আর জানা যায়নি। তবে আশা করতে দোষ নেই, পুলিশ কোনো একটা ব্যবস্থা নিতেও পারে। কারণ, অভিযোগদাতা জেলার শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা ।
কিন্তু আমাদের প্রশ্ন সেটা নয়। আমরা বলতে চাই, চাঁদাবাজ নামের ঘৃণ্য জীবদের হুমকি-ধমকি আর কত কাল চলবে? চাঁদাবাজ কারা, তারা কোথায় থাকে - এসব জানা কি পুলিশের জন্য খুব কঠিন কিছু? বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ জঙ্গিকে ধরতে পেরেছে পুলিশ, আর চাঁদাবাজদের ধরতে পারছে না – এটাও আমাদের বিশ্বাস করতে হবে?
চাঁদাবাজদের স্পর্ধা অনেক বেড়ে গেছে, তারা এখন ডিসিকে পর্যন্ত হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে দেযা যায় না। চাঁদাবাজসহ সব রকম অপরাধীকে পাকড়াও করে বিচারের মুখোমুখি করার অবশ্যকর্তব্যটি এখনই শুরু করতে হবে; যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।