দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার শান্তি আর সম্প্রীতির মহান বারতা নিয়ে আমাদের দরজায় কড়া নাড়বে পবিত্র ঈদুল ফিতর। সাদামাটা ভাষায় আমরা বলি, ঈদ মানে অনাবিল আনন্দ। তবে এবার দেশে ঈদ এক শোকাবহ পরিবেশে উদযাপিত হবে। রাজধানীতে নৃশংস জঙ্গি হামলায় দেশী-বিদেশী বেশ ক’জনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে মানুষের মনে শোক ও আতংকের রেশ কাটানো হয়তো কঠিন হয়ে যাবে।
তারপরও বিবার্তা পরিবার কামনা করছে, ঈদে সবার জীবন হয়ে উঠুক আনন্দময় ও নিরাপদ।
ঈদ সার্বজনীন উৎসব। কারণ সবাই ঈদের আনন্দের অংশীদার। সবার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যে রয়েছে অপার আনন্দ। ঈদের দিন ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে শামিল হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। ঈদের আগের এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আমরা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি। অপরের দুঃখ-কষ্ট বুঝতে সচেষ্ট হই। রোজার প্রধান লক্ষ্য ত্যাগ ও সংযম। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ত্যাগের অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলে তা হবে সবার জন্য কল্যাণকর।
তাই ঈদের আনন্দ কেবল একা ভোগ করলে হবে না, গরিব-দুঃখী মানুষকে তাতে শামিল করতে হবে। এটি ইসলামের শিক্ষা। এ কারণেই ধনীদের জন্য জাকাত ফরজ করা হয়েছে। আবার ঈদের নামাজ আদায়ের আগেই ফিতরা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। ফিতরার উদ্দেশ্য, দারিদ্র্যের কারণে যাতে কেউ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়, তার নিশ্চয়তা বিধান করা। সচ্ছলরা সঠিক নিয়মে জাকাত-ফেতরা দান করলে দরিদ্ররাও ঈদের খুশির ভাগ পেতে পারে।
প্রকৃত পক্ষে ঈদ আসে মহান সাম্যের দাওয়াত নিয়ে। অথচ কেউ কেউ ধর্মের আনুষ্ঠানিকতাকে বড় করে দেখেন। এর মর্ম অনুধাবন করেন না। ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়।
ঈদ উপলক্ষে রাজনৈতিক নেতারাও শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। এ দৃষ্টান্ত কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে যদি তারা রাজনীতিতেও শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারেন, তা হবে সমগ্র জাতির জন্য আনন্দের সংবাদ।
বিবার্তা পরিবার বিশ্বাস করে, ঈদের সংস্কৃতি আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যায় সামনের দিকে। কারণ ঈদের মধ্যে আনন্দ কাজ করে, হৃদ্যতা কাজ করে, সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে উঠে। ঈদের দিনের মত সুন্দর ও আনন্দময় হোক আমাদের প্রতিটি দিন। হাসি-খুশিতে ভরে উঠুক সবার জীবন।