হাজার হাজার মামলা। পুলিশি হয়রানি। জেল-জুলুম হুলিয়া মাথায় নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা টিকে আছেন। শিগগিরই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আবারও লড়াই শুরু হবে। দলীয় নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই লড়াইয়ে শামিল হবেন। ৩০ বছর রাজনীতির মাঠে লড়ছেন। নাম আলমগীর হোসেন। পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
বিবার্তা২৪.নেট এর জেলা প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসাইনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
পত্র পত্রিকায় জানা গেছে আগামী ২৭ অক্টোবর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে বিশ্ব সমাবেশ করবেন। এনিয়ে আপনার অভিমত কী? জবাবে আলমগীর হোসেন বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মূলত চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেছেন। দীর্ঘদিন পর লন্ডন তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা ম্যাডামের সঙ্গে দেখা করতে আসবেন্ এটাই স্বাভাবিক। বিগত দিনে যেসব প্রবাসী ভাইয়েরা আন্দোলন সংগ্রামে সহযোগিতা করেছেন তাদের সঙ্গে দেখা করা ও মতবিনিময় করাটাকে কেউ যদি বিশ্ব সমাবেশ বলেন তাতে আমার বলার কিছু নেই। আমি এটাকে স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই দেখি।
বিএনপি নেত্রী লন্ডন যাওয়ার পর থেকেই সরকারের মন্ত্রীরা ও বিভিন্ন পর্যারয়ের নেতারা বলছেন, মা ছেলে ষড়যন্ত্র করতেই তিনি লন্ডন গেছেন। এমন বক্তব্যের জবাবে আলমগীর হোসেন বলেন, বিএনপি কোনো ষড়যন্ত্রকারী দল নয়। বিএনপি ষড়যন্ত্র করে না। বরং ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে। মা-ছেলে কথা বলার জন্য লন্ডনে যেতে হয় না। যেকোনো স্থানে থেকে কোনোনা কোনো ভাবেই কথা বলতে পারেন।
আমি মনে করি আওয়ামী লীগই একটি ষড়যন্ত্রকারী দল। তারা বিগত দিনেও অনেক ষড়যন্ত্র করেছে। জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তাদের এই বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের কথা বার্তা লাগাম ছাড়া। তাদের কথার মধ্যে কোনো ভদ্রতা নেই। তারা কোনো নিয়ম নীতি মানেন না। তারা গায়ের জোরে কথা বলেন। গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যাকে সত্য বানানোর জন্য যত রকমের ফন্দি আছে সবই তারা জানেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার বিষয়টি কিভাবে দেখছেন? জবাবে বিএনপির এ নেতা বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করা বিএনপি সমর্থন করে না। এই নির্বাচন হবে একটি প্রহসণের নির্বাচন। মানুষ যেখানে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভাবছে, সেখানে স্থানীয় নির্বাচন তাদের মনোনিত ব্যক্তিরা রায় না পেলেও তাদের পাশ করিয়ে আনার ষড়যন্ত্রের অংশ। তবে আমরাও ছেড়ে দেব না। আমরা নির্বাচনের মাঠে থাকবো।
পিরোজপুরে বিএনপির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন। আমি ৩০ বছর রাজনীতি করি। পিরোজপুরের মাটি ও মানুষকে নিয়েই আমার রাজনীতি। সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে একটি দিক নির্দেশনামূলক চিঠি পেয়েছি। এরপরই জেলার সকল ওয়ার্ডে নতুন উদ্যোমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৯৯ ভাগ ওয়ার্ড কমিটি সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন কমিটি গঠনের কাজ চলছে। প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের বাধার মুখেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন। ইউনিয়ন কমিটি গঠনের পরই কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে জেলা সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
আলমগীর হোসেন বলেন, পিরোজপুর জেলায় বিএনপির বিরুদ্ধে ১২০ টি বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কয়েক হাজার নেতাকর্মীর মধ্যে গড়ে শতাধিক নেতাকর্মীকে প্রতি সপ্তাহে জজ কোর্টে হাজিরা দিতে হয়। এখনো ২০ জনের মতো নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। গত সপ্তাহে জেলা বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক সিকদার মল্লিক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চাঁন সরদারকে প্রকাশ্যে গতিরোধ করে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা নৃশংস হামলা করেছে। প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের শত বাধা উপেক্ষা করেও শতস্ফূর্তভাবে দলীয় নেতাকর্মীরা ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি করছেন।
শিগগিরই সারা দেশের কমিটি গঠন শেষে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেবেন। সেই ডাকে সারা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা আন্দোলনে শরীক হবেন। একই সঙ্গে একটি নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন।
বিবার্তা/দেলোয়ার/মহসিন