সময়ের আলোচিত নায়িকা পরীমনি এখন আছেন মহাফুরফুরে মেজাজে। কারণ, এবারের ঈদে মুক্তি পাওয়া তার অভিনীত ‘রক্ত’ছবিটি দারুণ ব্যবসা করেছে। আর সেই সাফল্য উপভোগ করছেন নায়িকা পরীমনি। বড়পর্দার বাইরে ঈদে ছোটপর্দায়ও তার অভিনীত ছবি প্রচার হয়েছে। এর দর্শকসাড়া নিয়েও কথা বলেছেন পরীমনি। কথা হলো তার সঙ্গে।
বিবার্তা : এবারের ঈদে আপনার অভিনীত ‘রক্ত’ ছায়াছবিটি মুক্তি পেয়েছে। দর্শকসাড়া কেমন পাচ্ছেন?
পরীমনি : দারুণ! এর আগে আমার যে ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে, তার চাইতে এটি ভিন্ন ধারার। আমার চরিত্রটিও নতুন। আগে এ ধরনের চরিত্রে কাজ করিনি। তাছাড়া এবারই প্রথম আমার অভিনীত কোনো ছবি ঈদে মুক্তি পেল। ছবিটি নিয়ে আমি যেমনটি আশা করেছিলাম দর্শকরা তারও বেশি সাড়া দিয়েছেন। আসলে ভালো ছবি হলে দর্শক ঠিকই হলে যায়। রক্তই এর প্রমাণ। প্রথম শো থেকে শুরু করে এখনো প্রতিটি শো হাউসফুল যাচ্ছে।
বিবার্তা : এই ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতাটা আমাদের সঙ্গে কি শেয়ার করবেন?
পরীমনি : এই ছবিতে কাজ করতে গিয়ে আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। এতে আমি যে চরিত্রে কাজ করেছি এর জন্য আমার এক ধরনের প্রস্তুতি ছিল। ছবিতে আমার চরিত্রের নাম সানিয়া। আমি চেষ্টা করেছি পরীকে ভুলে শতভাগ সানিয়া হয়ে উঠতে। আমার মনে হয়, আমি তা পেরেছি। এ কারণেই ছবিটি ভালো যাচ্ছে।
বিবার্তা : ঈদে চ্যানেল আইতে আপনার অভিনীত ‘মহুয়া সুন্দরী’নামের একটি চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার হয়েছে। এ ছবির জন্য কি কোনো সাড়া পেয়েছেন?
পরীমনি : হ্যাঁ, ছবিটি প্রচারের দিন অনেকেই আমাকে ফোন বা এসএমএস করে আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। এই ছবিটি নিয়ে আমার মধ্যে অনেক আবেগ কাজ করে। এটা আমার সাইন করা ছয় নম্বর ছবি। যখন সাইন করি, তখন আমার অভিনীত কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। ভালোবাসা সীমাহীনেরও কিছু কাজ বাকি ছিল। সেই সময় আমার মনে হয়েছিল এই ছবিটি আমাকে আলাদা একটি জায়গায় নিয়ে যাবে। শুটিংয়ের সময় তাই দেখলাম। আমি অনুভব করতে লাগলাম মহুয়া সুন্দরী আমাকে ভিন্ন একটি জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। আমি এই ছবিটিকে আলাদা অবস্থানে রাখতে চাই। আমি মনে করি, মহুয়া সুন্দরী সার্থক। পুরোপুরিই সার্থক। এখানে মহুয়া সুন্দরীর দিকে আঙুল তোলার কোনো সুযোগ নেই।
বিবার্তা : এক সময় চলচ্চিত্রে কাজের কোনো স্বপ্নই আপনার ছিল না। কিন্তু এখন পরীমণি অনেকেরই স্বপ্নের নায়িকা। এটা আপনাকে কতটা আলোড়িত করে?
পরীমনি : সত্যি বলতে কী, ভাবতে ভালোই লাগে, তবে মাঝে মাঝে লজ্জাও পাই। ছবি মুক্তিকে সামনে রেখে ‘মহুয়া সুন্দরী’চলচ্চিত্রের প্রমোশনের কাজে জামালপুর গিয়েছিলাম। তখন দেখলাম এক ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলছে, আই লাভ ইউ, আই লাভ ইউ। আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখি ও খুব পিচ্চি। ও আই লাভ ইউ কিন্তু ওর বোন বা নায়িকা হিসেবে বলেনি, বলেছে ওর প্রেমিকা হিসেবে। এই বিষয়টি আমার জন্য হয়তো অনেক মজার ছিল, তবে ও কিন্তু আমাকে ওর প্রেমিকার আসনেই রেখেছে। এই ধরনের পাওয়াগুলো আমাকে দারুণ রোমাঞ্চিত করে।
বিবার্তা : দেশীয় চলচ্চিত্রের দুস্থ শিল্পী বা বেকারদের জন্য এবার আপনি এফডিসিতে কোরবানি দিয়েছেন। কোন তাড়না থেকে এটি করলেন?
পরীমনি : এটা করেছি আমাদের শিল্পীদের প্রতি আমার একটা দায়বদ্ধতা থেকে। আমি চেয়েছিলাম আমার নানুবাড়িতে ঈদ করতে। কিন্তু যখন অসহায় এই শিল্পীদের কথা মনে পড়ল, মনে হলো এরাই তো আমার পরিবারের অংশ। ব্যস, তাদের জন্য কোরবানি করলাম। সত্যি বলতে কী, আমাদের রূপালি জগতের অনেক মানুষ রয়েছেন, যাদের জীবনটা পর্দার মতো রঙিন নয়। অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করেন। এটা আমাকে পোড়ায়। কষ্ট দেয়।
বিবার্তা/অভি/মৌসুমী/হুমায়ুন