সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর সহ-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, সরকারের উচিৎ সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া। সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন উপহার দিলে সরকারের গ্রহণ যোগ্যতা বাড়বে।
শুক্রবার বিকেলে গুলিস্তান সমিতি নিকেতনে তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিবার্তার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ অধিকাংশ মেয়র প্রার্থীও হেরে যায় তাহলে তো সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে না। এর ফলে বিরোধীরা ইস্যু খুঁজে পাবে না। তাই সরকারের উচিৎ দেশবাসীকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশের মানুষ উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। কারণ সব সময় দেশে উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন হতো।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের মতো ছাত্রলীগ-যুবলীগ ভোট জালিয়াতি করলে সরকারের সুনাম ক্ষুন্ন হবে। সরকার যদি তাদের ব্যাপারে কঠোর না হয় তাহলে এ নির্বাচনেও তারা ভোট কেন্দ্র দখল করবে।
জামায়াতের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রসঙ্গে সুজন বলেন, যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত যদি অন্য কোনো দলের ব্যানারে পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উচিত তাদের সব প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা। জামায়াত সংশ্লিষ্ট নেতাদের অন্য দলের ব্যানারে নির্বাচনে সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।
তিনি বলেন, মৌলবাদী শক্তিরা বিএনপিকে গ্রাস করেছে। মৌলবাদী শক্তি ও বিদেশিদের সহযোগিতায় বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে দেশে সংহিস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হচ্ছে। দেশের মানুষ জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি বিশ্বাস করে না। শান্তির রাজনীতে বিশ্বাস করে। তাই বিএনপিকে শান্তির রাজনীতিতে ফিরে আসা উচিৎ।
সরকারের ডিজিটাল পদক্ষেপ প্রসঙ্গে যুবমৈত্রীর এই নেতা বলেন, তথ্য প্রযুক্তিতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্কুলের বেতন, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বিল, ভোটার আইডি কার্ড, ব্যাংকিং ব্যবস্থাসহ সব ক্ষেত্রে ডিজিটালের ছোঁয়া লেগেছে। সরকারের এই উদ্যোগ আসলে প্রশংসনীয়। সরকারের উচিৎ তথ্য প্রযুক্তি গ্রাম-গঞ্জের জনগণের প্রত্যেক দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেয়া।
তিনি বলেন, তৃনমূল নেতারা চেয়েছিল বিএনপি নির্বাচনে আসুক। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। এখন তাদের সংসদে প্রতিনিধিত্ব নেই। বিরোধী দলেও নেই।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জন্য সরকারকে স্বাগত জানিয়ে যুবমৈত্রীর এই নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পক্ষে। তাই বিএনপির মধ্যে যে সব মুক্তিযোদ্ধা আছেন তাদের দল ছেড়ে দেয়া উচিৎ।
তিনি আরো বলেন, লুটপাট সন্ত্রাস দেশের মানুষ পছন্দ করে না। আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত দল আলাদা ভাবে নির্বাচনে অংশ নিবে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নৌকা বিজয়ী হওয়া কঠিন হতে পারে। আর জোটভুক্ত দল একসঙ্গে আওয়ামী লীগের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ দিলে নৌকা বিজয়ী হবে। এই পজিটিভ ইমেজ নেওয়ার আগ্রহ সরকারের নেই।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন সবার মনে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ-যুবলীগ নিয়ন্ত্রণহীন। সন্ত্রাস ও টেন্ডারবাজিতে ব্যস্ত। তাই পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন এই নেতা।
তিনি আরো বলেন, ওয়াকার্স পার্টি দেশে অধিকাংশ জেলা উপজেলায় সাংগঠনিক অবস্থা অনেকটা ভালো। তবে আরো শক্তিশালী করতে হবে। নেতাকর্মীরা মনে করছেন ক্ষমতায় তো আছি। তাই নেতাকর্মীরা জনবিরোধী কোনো কর্মসূচিতে রাজপথে নেই। নেতাকর্মীদের চাওয়া পাওয়া বেড়ে গেছে। তারা সবাই আখের গোছাতে ব্যস্ত।
বিবার্তা//দ্বীপ//মাজহার