‘মার্কেটপ্লেসে কাজের রয়েছে অবারিত সুযোগ’

‘মার্কেটপ্লেসে কাজের রয়েছে অবারিত সুযোগ’
প্রকাশ : ১৫ মে ২০১৬, ১১:০৬:২৪
‘মার্কেটপ্লেসে কাজের রয়েছে অবারিত সুযোগ’
উজ্জ্বল এ গমেজ
প্রিন্ট অ-অ+
কাজের প্রতি আন্তরিক ভালবাসা, অধ্যবসায় আর পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকলে শূন্য থেকেই করা যায় অনেক কিছু। সেই সাথে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিপুল জনপ্রিয়তা। এগুলোর মাধ্যমে নিজে উদ্যোক্তা হয়ে আরো অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। এমনই একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মো. মাজহারুল ইসলাম তানিম। তিনি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের একজন পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 
 
মাজহারুল ইসলাম তানিমের জন্ম দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলায়। সেখানেই কাটে তার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনের দিনগুলো। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বাবা ব্যবসায়ী আর মা গৃহিনী। বড় দুই ভাইও ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী পরিবার পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা তানিম শৈশব থেকেই বড় ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। দিনাজপুর থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা এসে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচলর অব বিজনেস অ্যাডমিনস্ট্রেশন (বিবিএ) সম্পন্ন করেন। এরই মধ্যেই পড়াশুনার খরচ থেকে টাকা সেভ করে একদিন শুরু করেন তার স্বপ্নের শপ। অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে এখন শপটি ভাল চলছে। এ শপে এখন কাজ করছেন বেশ কয়েকজন কর্মী। 
 
মঙ্গলবারে রাজধানীর মহাখালীর মুঠোবাজার ডটকম-এর অফিসে গেলে কথা হয় শপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাজহারুল ইসলাম তানিমের সাথে। একান্ত আলাপে বেরিয়ে আসে তার শূন্য থেকে একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে ই-কমার্স ব্যবসায়ী হওয়ার গল্প। তরুণ উদ্যোক্তার সে গল্পটি বিবার্তা২৪.নেটের পাঠকদের জানাচ্ছে প্রতিবেদক উজ্জ্বল এ গমেজ।
‘মার্কেটপ্লেসে কাজের রয়েছে অবারিত সুযোগ’
বিবার্তা২৪.নেট: মুঠোবাজার ডটকমশপের শুরুর গল্পটা জানতে চাই। 
মাজহারুল ইসলাম: এই শপ আমি শুরু করেছিলাম ২০১৩ তে। ছাত্র জীবনেই শুরু আমার এই ব্যবসা। তখনো এরকম ওয়েবসাইট করতে পারিনি। ফেসবুক দিয়ে টুকটাক কিছু পণ্য বিক্রি করতাম। এর পর ধীরে ধীরে ব্যবসায় লাভ আসতে থাকে। আমার পুঁজিও বাড়তে থাকে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে ওয়েবে www.muthobazaar.com শুরু করি। শুরু করেছিলাম মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ২০১৫ মাঝে এসে আমার সব মিলে পুঁজি হয় সাত লাখ টাকা। একটু অবাকও লাগতে পারে। আমি নিজেই সব কাজ করতাম। আমার কোন কর্মী ছিল না। এ জন্যই এটা সম্ভব হয়ে ওঠে। এই ব্যবসা থেকে কোনো টাকা আমি খরচ করতাম না। যেহেতু আমাকে বাসা থেকে পড়াশুনা ও থাকা খাওয়ার খরচ দেওয়া হতো। এভাবেই চলতে থাকে আমার ব্যবসা। আস্তে আস্তে আমার ব্যবসার পরিধি বাড়তে থাকে এবং বিক্রিও ভাল হচ্ছে। বর্তমানে মুঠোবাজারের অবস্থা অনেক ভাল অবস্থানে।
 
বিবার্তা২৪.নেট:  এই কাজ করার অনুপ্রেরণা পেলেন কীভাবে?
মাজহারুল ইসলাম: আমার এই কাজের অনুপ্রেরণার মূলে রয়েছে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সটির চেয়ারম্যান সবুর খান স্যার। তিনি আমাকে ই-কমার্স বিজনেস করার বিষয়ে উৎসাহ দিতেন। কিভাবে শূন্য থেকে এই বিজনেস শুরু করা যায় সেই রাস্তা দেখিয়েছেন তিনি। তাঁরই উৎসাহ আর অনুপ্রেরণায় আজ আমি এই অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি। আমার এই ব্যবসার পিছনে সবুর খান স্যারের অবদান অনেক বেশি ।
 
বিবার্তা২৪.নেট:  আপনাদের এই অনলাইন শপে বিক্রির প্রক্রিয়াটা বলুন।
মাজহারুল ইসলাম:  মুঠোবাজার ডট কম অথবা আমাদের ফেসবুক পেজ থেকেও পণ্য কিনতে পারেন ক্রেতারা। ওয়েবসাইট খুলতে হবে তারপর আপনি কি কিনতে চান সেই অনুযায়ী ক্যাটাগরি থেকে পছন্দের পণ্যটিতে ক্লিক করে ক্রেতার সকল তথ্য দিলে আমরা সে পণ্যটি ক্যাশঅন হোম ডেলিভেরি দিয়ে থাকি ।
 
বিবার্তা২৪.নেট:  আপনাদের এই অনলাইন শপে মার্কেটিং বিষয়ে সংক্ষেপে বলুন।
মাজহারুল ইসলাম: দুই ধরনের মার্কেটিং আছে। অনলাইন মার্কেটিং আর অফ লাইন মার্কেটিং। অনলাইন মার্কেটিংটা মূলত ফেসবুকনির্ভর। আমরা ইন্টারনেটে ফেসবুকে মার্কেটিং করে থাকি। আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ আছে। ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের পোস্ট করার মাধ্যমে ক্রেতাগ্রাহকদের সামনে তুলে ধরি। আর অফলাইন মার্কেটিং খুব আলাদা কিছু নয়। বিভিন্ন ইউনিভার্সটিতে ক্যাম্পেইনে গিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন এসব কার্যক্রম করে থাকি। তবে কাজের ক্ষেত্রে নিজস্ব আইডিয়া, ব্যাতিক্রমি উপস্থাপনা এই বিষয়গুলোর প্রাধান্য থাকে।
‘মার্কেটপ্লেসে কাজের রয়েছে অবারিত সুযোগ’
বিবার্তা২৪.নেট: আপনার শপে কি ধরনের পণ্য বিক্রি করা হয়?
মাজহারুল ইসলাম: আমাদের শপে পাওয়া যায় শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, থ্রী পিস, শাড়ি, গিফট আইটেম, বিভিন্ন গেজেট পণ্য, ওয়েবসাইট তৈরি সার্ভিস, বিভিন্ন দেশ-বিদেশের ভ্রমণ প্যাকেজ ইত্যাদি।   
 
বিবার্তা২৪.নেট: এ কাজ করতে গিয়ে আপনি কি ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন? 
মাজহারুল ইসলাম: প্রথমেই যে সমস্যা আমি ফেস করেছি, সেটা হলো কুরিয়ার সার্ভিস নিয়ে। এটা একটা বড় ধরনের সমস্যা। এমনও হয়েছে যে আমার পণ্য চুরি হয়ে গেছে। তারপর আরো একটা সমস্যা হলো, ঢাকাতে ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেম থাকলেও, ঢাকার বাইরে নেই। কিন্তু গ্রাহকরা বেশি পছন্দ করে ক্যাশ অন ডেলিভারিকে। আরো একটা ব্যাপার আমাদের ক্ষতি করছে, অনেক ফ্রড আছে অনলাইনে। এরা গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে প্রডাক্ট দিচ্ছে না। দিলেও খুব বাজে প্রডাক্ট বা অন্য কিছু পাঠিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে অনলাইন স্টোরগুলোর প্রতি অনেকের অবিশ্বাস গড়ে উঠেছে। এর ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
 
বিবার্তা/গমেজ/জিয়া
 
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ

কারওয়ান বাজার (২য় তলা), ঢাকা-১২১৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১১৯২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com