নেতৃত্ব নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয়পার্টির মতো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কোন্দল দলীয় কোন্দলে পরিণত হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে সচেতন হতে হবে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতে ১/১১ এর মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দলীয় বিষয়গুলো নিয়ে গত কিছুদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে বুঝা গেছে, সাধারণ মানুষ এখন খুবই রাজনৈতিক সচেতন। তাদের বক্তব্যগুলো ছিল এক একটা রাজনৈতিক বিশ্লেষনের মতো।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি বুধবার একুশে গ্রন্থ মেলা প্রাঙ্গণে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আকবর হোসেনের সাথে কথপোকথনের এক পর্যায়ে বলছিলেন ‘আমি ছাত্র জীবনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম। ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে যখন আওয়ামী লীগের করুন দশা হয়েছিল, চরম দুর্দিন যাচ্ছিল তখন আস্তে আস্তে ভেসে উঠছিল বঙ্গবন্ধুর সাথে খোন্দকার মোশতাকের ব্যক্তিগত কোন্দলগুলো। বঙ্গবন্ধু যখন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তখন খোন্দকার মোশতাকও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের একজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে সাধারণ সম্পাদক হয়ে যান। কিন্তু খোন্দকার মোশতাক বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেননি। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে খোন্দকার মোশতাকের ষড়যন্ত্র সেদিন থেকেই শুরু হয়েছে। যা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের মতো এত বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। আকবর হোসেন বলেন, সেদিন যে আওয়ামী লীগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সে কথা ভুল, দেশেরও ক্ষতি কম হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্র করে মেরে ফেলার মাধ্যমে আমরা পিছিয়ে গেছি।’
গত ১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ধানমন্ডি লেকে কথা হচ্ছিল চা বিক্রেতা ৫০/৫৫ বছর বয়সী জিন্নাত আলীর সাথে। আমাদের কথপোকথন চলছিল ব্যবসা পাতির অবস্থা নিয়ে। এক পর্যায়ে জিন্নাত আলীর সাথে কথা হয় রাজনৈতিক বিভিন্ন প্রসঙ্গে। বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির প্রসঙ্গ উঠতেই জিন্নাত আলী বলছিলন, আমি জিয়াউর রহমানের এবং এরশাদের শাসন দেখেছি। তাগো দলে সব সুবিধাবাদীগুলোরে টাইনা টাইনা নেওয়ার কারণে দলগুলোর এহন এই অবস্থা। এইগুলায় নিজেগো সুবিধা ছাড়া কিছু বুঝে না। আমাগো কাম ভোট দেওন আর ৫ বছর চাইয়া চাইয়া দেহন। কত শাসন দেখলাম। আমাগো অবস্থা একই। নেতায় নেতায় লাগে, আবার দল বানায় , এই হইলো অবস্থা। আর কিছু কমু না।
লেখক : ফ্রীল্যান্স সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী
বিবার্তা/এমহোসেন