অসভ্য যুগে যে কুকীর্তির স্বাক্ষী হতে হয়নি ধরাবাসীকে তেমন কুকীর্তি এই সভ্য যুগে অহরহ ঘটছে। যে শিশুটি বুঝতেই শিখলো না মানুষের জৈবিক চাহিদা বলে কোনো তাড়না আছে, তেমন শিশুদেরকে ধর্ষণের চিত্র দেশের আনাচে-কানাচে ঘটছে প্রতিনিয়ত।
শুধু কি শিশুদের ধর্ষণ? ধর্ষণ বলতে যা বোঝায় তা কোন দৃষ্টিকোনে এদের ওপর ঘটানো যায়। ওহে মানুষ! তোমরা পশুর পাশবিকতাকেও হার মানালে তবে? ধর্ষণের পর খুন করে দেহটি গুম করে রাখা হচ্ছে। কাউকে বিশ্বাস করার উপায় আর থাকছে না।
মানবিকতার, মনু্ষ্যত্বের, বিবেকবোধের এমন অধঃপতনের স্বাক্ষী বোধহয় কোনো সভ্যতাই হয়নি, যেমনটা হচ্ছে বিকৃত বর্তমান সমাজ-সভ্যতা। ধর্ষণ করা যায়নি বলে, দু’ক্লাসের পড়ুয়া ফুটফুটে শিশুটিকে গলাটিপে হত্যা করতে একবারও বুক কাঁপেনি মানুষাকৃতির পিশাচের।
মানুষের এমন অধোঃগতি যে কেন ঘটলো, তার উত্তর কে দেবে? মাত্র পাঁচ-ছয় বছরের শিশুটি যখন শিক্ষক, চাচা-মামা কিংবা অন্য কারো দ্বারা ধর্ষিতা হওয়ার সংবাদ শুনি, তখন লজ্জায়-ঘৃণায় চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। এই কি মানুষ? সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব এরাই? কোন পশুর রক্ত এদের শরীরে প্রবাহিত হলে এরা এমন কুকীর্তি করতে পারে-তার উত্তর কি কারো জানা আছে?
শুধু মেয়ে শিশু নয়; বরং জানোয়ারের দল ছেলেদেরও বলৎকার করতে পিছপা হচ্ছে না । কোন সভ্যতার তরীতে চড়েছি আমরা? গন্তব্য কোথায় আমাদের? মানুষে আর পশুতে একাকার হওয়ার দিন কি তবে সমাগত?
ধর্ষকের একমাত্র শাস্তির বিধান হোক মৃত্যুদণ্ড। সমাজ পরিচালকরা ভাবুন, সমাজের শৃঙ্খলা রোধ করতে বোধহয় এর বিকল্প নেই। যারা দেবশিশুদের ধর্ষণ-হত্যা করতে দ্বিদ্বা করে না, তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে কেন? এসব নপুংসকদের প্রকাশ্যে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে দেয়া হোক। মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করুক। ভীতির সঞ্চার হোক।
শিশুরাও যাদের লালসা থেকে রেহাই পায় না, তাদের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই।ওদের শরীরে মানুষের নয়; বরং জানোয়ার রক্ত বইছে। ওদের বাঁচতে দিলে, বংশবৃদ্ধির সুযোগ দিলে মানব সমাজে কেবল অমানুষ-পশুতুল্য জীবের বিস্তার ঘটবে। কাজেই লাগাম টেনে দেয়ার এটাই উত্তম সময় ।
শুধু শিশু নয়; বরং যে কোনো বয়সের নারীকেই পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে। ধর্ষকের পরিচয় সে কেবলই ধর্ষক। সে কোনো মানুষের সন্তান নয়, পিতা নয়, পুত্র নয়, নয় ভাইও। ধর্ষণ রোধে ধর্ষকদের ব্যাপারে রাষ্ট্র যদি কঠোরতা না দেখায় তবে সমাজে ক্ষতের গভীরতা বাড়তেই থাকবে।
ধর্ষকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে লড়তে হবে কঠোরভাবে। কোনো ধর্ষক যেন প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রদর্শনপূর্বক ছাড় পেয়ে না যায়। আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তার স্বার্থে আজ যদি সবাই সোচ্চার না হই, তবে ধর্ষকের জন্ম হবে পরিবারে পরিবারে। ধর্ষিতা হতে থাকবে আমাদেরই আপনজন। সচেতনতা, সুশিক্ষা এবং শাসন দিয়েই গড়ে তুলি আমাদের আগামী প্রজন্ম।
fb.com/rajucolumnist/
বিবার্তা/কাফী