ঊনবিংশ শতাব্দীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায়, বাংলার রাজনীতিতে ছাত্ররাজনীতির অবদান কতটা। বাংলার ইতিহাসে ১৯৫২, ’৬৯, ’৭১ কিংবা ’৯০কে অস্বীকার করা তো সম্ভব নয়, তবে ছাত্ররাজনীতিকে কিভাবে অস্বীকার করা সম্ভব?
ছাত্ররাজনীতিই পারে একজন রাজনীতিবিদকে রাজনীতির হাতেখড়ি দিতে। ছাত্ররাজনীতি একই সাথে শিক্ষা ও রাজনীতি শেখাচ্ছে। ফলে শিক্ষিত ও দক্ষ রাজনীতিবিদ গড়ে উঠছে।
অনেকেই বলেন, ছাত্রদের কাজ পড়াশোনা করা, রাজনীতি করা নয়। তাদের বলতে চাই, শিক্ষার উদ্দেশ্য সচেতন নাগরিক গড়ে তোলা।
রাজনৈতিক সচেতনতা গড়ে তোলা কি শিক্ষার অংশ নয়?
সচেতন রাজনৈতিক সমাজ এবং আদর্শ রাজনীতিবিদ গড়ে তোলার প্লাটফর্ম হলো ছাত্রসংগঠন। বাংলাদেশের মতো দেশে শিক্ষিত রাজনীতিবিদ এবং শিক্ষিত রাজনৈতিক সমাজ গঠনে ছাত্ররাজনীতির বিকল্প নেই।
প্রত্যেকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য, আদর্শ নাগরিক গড়ে তোলা। একজন ছাত্রকে শুধু পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ রেখেই আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এজন্য তার মধ্যে দেশের প্রতি ভালোবাসা, কর্তব্য ও দায়িত্ববোধকে জাগ্রত করতে হবে।
তার মধ্যে রাজনৈতিক চেতনাকেও জাগ্রত করতে হবে। কারণ, আমাদের দেশ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। তাই রাজনীতি এবং গণতন্ত্র চর্চা করা একজন আদর্শ মানুষ গড়ে তোলার পূর্ব শর্ত।
আমাদের দেশের প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, শিক্ষার্থীদের এত বড় অংশ এক ধাপ পিছিয়ে। কারণ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি বৈধ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা রাজনীতি ও গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ পাচ্ছে না। দেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হয় ঠিকই, কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজনীতি চর্চা এবং গণতন্ত্র চর্চা থেকে বঞ্চিত।
এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার ভার হাতে নেবে কিভাবে?
দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ, শিক্ষিত রাজনীতিবিদ এবং সচেতন রাজনৈতিক সমাজ গড়ে তুলতে সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি উন্মুক্ত করার বিকল্প নেই।
লেখক : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক শাখা।
বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন