বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় জঙ্গিবাদ। একটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্যে যদিও এটি খুবই স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু তবুও আশ্চর্যের বিষয় হলো এই পুরো বিষয়টিকে নিয়ে যে পর্যবেক্ষণ বা নিরীক্ষা করা হয় তা মূলত ভাসা ভাসা।
জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে বুজুর্গগণ সহজেই একটি সরল স্বীকারোক্তি দিয়ে দেন যে, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন এবং অজ্ঞতাই এর নেপথ্যের মূল কারণ । কিন্তু সত্যিই কি শুধু তাই ? কেননা তাই যদি হতো তাহলে বহির্বিশ্বের বিত্তশালী ছেলেমেয়েরা কেন এই মানববিধ্বংসী খেলায় মাতছে ?
মানবমনে রেখাপাত করার সর্বোত্তম সময় হলো তার শৈশব ও কৈশোর। মস্তিষ্কের জায়গাটা খোলা রেখে একটু চোখ রাখুন বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের দিকে । শৈশব-কৈশোরে ডানা মেলে উড়ন্ত কোমলমতি শিশুদের হাতে কত বিচিত্র মাগ্যাজিন তুলে দিচ্ছেন তারা। এসব ম্যাগাজিন যদি একবার খুলে দেখেন তাহলে দেখবেন ওতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কি করে বিকৃত করে তুলে ধরা হয়েছে।
আমরা কি পারছি একটি শিশুর হাতে তার উপযোগী করে আমাদের গৌরবময় ইতিহাসকে পৌঁছে দিতে ? যদি নাই-ই পেরে থাকি, তবে তাদেরকে কি করে একেবারে সঠিক ট্র্যাকে আশা করি ?
জঙ্গিবাদ কোনো বায়বীয় বিষয়বস্তু নয়। এটি চিন্তার বিপক্ষে চিন্তার বা আদর্শের বিপক্ষে আদর্শের লড়াই। একটু খোলা চোখে দেখুন তো জঙ্গিদের আসলে আদর্শের ভিত্তি কি ? সঠিকভাবে সত্য অন্বেষণ করলে দেখা যাবে, ওদের পুরোটাই আসলে ফাঁকা ।
জাতি হিসেবে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংগ্রাম কোনো অংশেই কম নয় । কিন্তু সমস্যা হলো আমরা সেটাকে শুধু ইতিহাসের জাদুঘরে রেখে বর্তমানের মাছি তাড়াচ্ছি। কিন্তু সেটাকে সববয়সী মানুষের কাছে পৌঁছানোর কাজে কারোরই কোন ভ্রূক্ষেপ নেই ।
খুব আশ্চর্য লাগে যখন দেখি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন ডায়নামিক নেতার হার না মানা আদর্শের দৃষ্টান্ত থাকার পরও কিছু মানুষ ভ্রান্ত পথে যায়। মুক্তিযুদ্ধের মতো ত্যাগ এবং গৌরবের ইতিহাস থাকার পরও কিছু মানুষ অন্ধকার পথে যায় ।
ইতিহাস ব্যতিত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কল্পনাতীত । তাই সুস্থ ও উন্নয়নমুখী বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্যে ইতিহাসকে সববয়সীদের কাছে পৌঁছে দেয়াটাই এখন সময়ের দাবি ।
লেখক : সাংগঠনিক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রলীগ
বিবার্তা/মৌসুমী/হুমায়ুন