সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন দ্বিগুণ হয়ে যাবার পর সহকর্মীদের অনেককে বেশ আক্ষেপ করতে দেখেছি। কেন সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার চেষ্টা না করে সাংবাদিকতা করতে এসেছেন- এই আক্ষেপে পুড়েছেন অনেকে।
অনেকে ধরেই নিয়েছেন, সরকারি চাকরির চেষ্টা করলেও লাভ হতো না কিছু। কারণ সেই যোগ্যতা তারা ধারণ করেন না। কয়দিন আগে এক সহকর্মী বললেন, তিনি ক্যাম্পাসে থাকতে গণিতে দুর্বল যে বন্ধুকে পড়া দেখিয়ে দিতেন সেই বন্ধু এখন ব্যাংকে চাকরি করে। বন্ধুর বেতন তার থেকে বেশি।
সেই সহকর্মীর দুই ভাই পুলিশ কর্মকর্তা। তিন ভাইয়ের মধ্যে পড়াশোনায় সবচেয়ে ভাল হলেও সাংবাদিক হওয়ায় দুই ভাইয়ের চেয়ে লোকে তাকে কম গুরুত্ব দেয়। আজ সকালে আরেক সহকর্মী একজন সাবেক কূটনীতিক তার পরিচয়ে কূটনীতিক বানান ভুল করায় বললেন, দেখেন ভাই এমন মানুষও বানান ভুল করেন।
আমি বললাম, তাতে কী? বানান তো হরহামেশা আমরাও ভুল করি। প্রায়ই এমন অভিজ্ঞতা হয় আমাদের। আমাদের সাংবাদিকদের অনেকেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কূটনৈতিক, সরকারি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিজেদের চেয়ে বেশি যোগ্য ভাবেন। আমাদের দেশে হয়তো বিষয়টি মোটা দাগে সত্যি।
সাংবাদিকদের চাকরির অনিশ্চয়তা কিন্তু সবখানেই আছে। বলাই হয়ে থাকে, সাংবাদিককে সবসময় চাকরি ছাড়তে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ, কোন খবরের জন্য ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে তার যেকোনো সময়ই সমস্যা হয়ে যেতে পারে।
এককালের এই ধারণা হয়ত আজকাল আর নেই। কিন্তু হীনমন্যতায় ভুগলে কি সাংবাদিকতা করা যায়? সাংবাদিককে স্বাধীন মনোভাবের হতেই হবে আর্থিক সংকট বা সামাজিক সংকট যতই থাকুক।
বিবার্তা/জিয়া