বিশ্বরাজনীতির প্রতিটি অর্জনই সংগ্রাম নির্ভর। আজকের বাংলাদেশ সাত কোটি বাঙালীর সংগ্রামেরই ফসল। কিন্তু এই সংগ্রাম মানেই হিংস্রতা নয়, আবার আন্দোলন মানেই শুধু রক্তাক্ত রাজপথ নয়। অধিকার মানেই জোর করে ছিনিয়ে নেয়া নয়। রাজনীতি মানে হিংস্রতা, রক্তাক্ত রাজপথ কিংবা কোনো কিছু ছিনিয়ে আনা নয়।
রাজনীতি মানে অর্জন, রাজনীতি মানে দেশ ও জনসাধারণের স্বার্থে মতামত দেয়া। পারস্পরিক সিদ্ধান্ত ও মেধার চর্চা করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখা।
বিশ্ব রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ দ্রুত বাড়ছে। রাজনীতিতে নারীদের ক্ষমতা আছে। তারা বুঝতে শিখেছে সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা আছে তাদের। নারী-সত্তার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ধারণ করা, পোষণ করা ও ফুটিয়ে তোলা। হোক সামাজিক বা রাজনৈতিক। নারী হচ্ছে মা, নারী ভালোবাসা, নারী জ্বালাময়ী, নারী সংগ্রামী, নারী আলোক বর্তিকা নিয়ে এসেছে যুগযুগ ধরে।
তাই তো নবজাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি, ‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ তৃতীয় বিশ্বের অনগ্রসর দেশগুলোর পশ্চাৎপদের জন্য দায়ী নারীর শিক্ষা-দীক্ষা ও রাজনৈতিক অবস্থান।
আজ নারীজাতি শিকল ভেঙে আকাশে উড়ছে, সমুদ্র জয়ে অবদান রাখছে। ভাবা যায়? গত ২০ বছর আগেও এটা অনেক কঠিন ছিল। আজ পুরুষের সহযোদ্ধা হিসেবে রাজনীতিতে নারীদের আগমন ঘটছে। যদি এই আগমনের হার ক্রমশ বৃদ্ধি পায় তবে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি দেশের উন্নয়নের গ্রাফ এবং নারীর উন্নয়ন সূচক উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পাবে।
হে নারী, ধ্বসান নয়, সৃষ্টির উল্লাসে মেতে উঠি। তোমার ত্যাগ, সেবা, মেধা, রাজনীতিতে গৌরবময় মহিমা দিতে পারে। ভেতরের তাড়না ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই নারীকে এগিয়ে আসতে হবে রাজনীতিতে।
আজ নারী তুমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ নিচ্ছ, চাকরি করার সুযোগ পাচ্ছো। তুমি কি জানো তোমার এই সুযোগটা কেনো পাচ্ছো? অন্ধকারাচ্ছন সেই সময় জাগরণের আলো নিয়ে এসেছিল বেগম রোকেয়া, জ্ঞানের মশাল জ্বেলে গিয়েছিল নারীসত্তায়। সেই জ্ঞানের মশাল হাতে নিয়ে যারা বেড়ে ওঠে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তাঁরই একজন। স্বশিক্ষিত ও সুশিক্ষিত হয়ে তিনি নারীদের সকল ধরণের সুযোগ দিতে বদ্ধ পরিকর। আজ বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর দৃপ্ত পদচারণা, হাতে সফলতার মেডেল।
চলো সেই আলো জ্বালাই, আকাশে উড়ি। প্রতিবাদী, মমতাময়ী, বিপ্লবী হই। দেশের জন্য, মানবতার জন্য, সমাজের জন্য, দায় মুক্তির জন্য ‘শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির, পতাকায় রাজনীতিক স্লোগানে স্লোগানে করি সকল অপশক্তি রোধ। তোমার আমার মেধা, যোগ্যতা, সাহসিকতা দিয়ে আমাদেরই অনুজদের স্বপ্নপথ করে দিয়ে যাবো কন্টকহীন - এই হোক প্রতিজ্ঞা।
‘এসো আলো হাতে আঁধারের যাত্রী হই, ভিন্ন হই সন্ত্রাস - পক্ষপাতিবাদ আর মুক্তির মিছিলে তুলি হিরন্ময় পতাকা।’
লেখক : ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ)
বিবার্তা/মৌসুমী